দেশের প্রান্তিক অনেক খামারি ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছে। অনেকেই আজকাল বাণিজ্যিকভাবে ছাগলের খামার দিচ্ছে। ভাগ্য পরিবর্তন করতে ছাগলের খামারের দিকে ঝুঁকছেন অনেকে। ছাগল পালনের সবথেকে বেশি ব্যয় হয় খাদ্য প্রদানে। তাই প্রত্যেক ছাগল খামারিদের জানা উচিৎ প্রতিদিন কি পরিমাণ দানাদার খাদ্য ছাগলকে দিতে হবে।
বিএলআরআই এর তথ্য অনুযায়ী প্রাপ্ত বয়ষ্ক ব্লাক বেংগল ছাগলের জন্য মাথাপিছু ১৬০ গ্রাম দানাদার প্রয়োজন হয়। ক্রস ছোট আকারের ছাগলের জন্যও এটা অনুসরণ করা যেতে পারে। সাধারণত বড় জাতের ছাগলের জন্য দৈনিক ২০০-৪০০গ্রাম দানাদার খাবার দিতে হয়।
এছাড়াও ছাগলের জাত, দুধ উৎপাদন, ঘাসের প্রোটিনমান, দৈহিক ওজন ইত্যাদি আরো কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে ক্ষেত্র বিশেষে পরিমাণে কিছু কম বা বেশী দিতে হয়।
খাদ্য প্রস্তুত প্রণালীঃ
ধাপ-১:
প্রথমেই খাদ্য উপাদান গুলোকে ০৩(তিন)টি ক্যাটাগরীতে ভাগ করে নিন। ক্রমিক নং০১ এবং ০২ একটা ক্যাটাগরী (সরিষার খৈল ব্যবহার না করলে ০১-০৩ পর্যন্ত একই ক্যাটাগরীতে থাকবে)। সরিষার খৈল ব্যবহার করলে তা আলাদা ক্যাটাগরীতে রাখুন। বাকি সব উপাদানগুলো আরেকটা ক্যাটাগরীতে।
ধাপ-২
এবার সরিষার খৈল বাদে ক্যাটাগরী অনুযায়ী বাকি উপাদান গুলো আলাদা মিশিয়ে নিয়ে আলাদা বস্তায় অথবা ড্রামে সংরক্ষণ করুন।
ধাপ-৩:
এবার আপনার খামারে ছাগলের সংখ্যা হিসাব করে মোট কত কেজি দানাদার খাবার লাগবে তা ক্যাটাগরী অনুযায়ী আলাদা আলাদা পরিমাপ করে নিন।
ধাপ-৪:
প্রতিদিন সন্ধায় পরিমাণ মত পানি কুসুম গরম করে তার মধ্যে ১-২ মুঠি চিটাগুড় এবং প্রথম ক্যাটাগরীর খাদ্য উপাদান অর্থাৎ গম ও ভূট্টা প্রতি কেজির জন্য ০৩-০৪ গ্রাম বেকারী ঈস্ট ভাল করে মিশিয়ে নিন।
ধাপ-৫:
এবার সেই পানিতে প্রথম ক্যাটাগরীর খাদ্য উপাদান অর্থাৎ ভুট্টা এবং গম মাখা মাখা করে মিশিয়ে নিয়ে ঢাকনাযুক্ত কোন ড্রাম অথবা বালতিতে বায়ুরোধ করে রেখে দিন।
ধাপ-৬:
আলাদা একটা পাত্রে সরিষার খৈল ভিজিয়ে রাখুন (যদি সরিষার খৈল ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে)।
ধাপ-৭:
পরদিন ০৩(তিন) ক্যাটাগরীর উপাদানই একসাথে মিশিয়ে ছাগলকে পরিবেশণ করুন। সাথে কিছু পরিমাণ হে অথবা ধানের খর টুকরো করে কেটে মিশিয়ে দিতে পারেন।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ-
(ক) ছাগলকে যেকোন নতুন খাবারই অল্প অল্প করে খাইয়ে অভ্যাস করিয়ে নিতে হবে।
(খ) গম, ভূট্টা ইত্যাদি অবশ্যই ভেংগে নিতে হবে। দানাযুক্ত খাবার ভেংগে না দিলে ছাগলের হজম প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে।
(গ) আপনি চাইলে ঈস্ট ব্যবহারের পরিবর্তে গম ও ভুট্টা সিদ্ধ করেও ব্যবহার করতে পারেন।