গাজীপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে কারখানার পরিত্যক্ত বিষাক্ত তুলা। এতে খামারিরা সাময়িক লাভবান হলেও রোগাক্রান্ত হচ্ছে গবাদিপশু।
গাজীপুর সদরে পশুসম্পদ অফিস ও স্থানীয়রা জানায়, জেলায় সরকারি হিসাবে গবাদিপশু রয়েছে ২ লাখেরও বেশি। বিশেষ করে গাজীপুরে শিল্পায়নের ফলে কৃষিকাজ ও কৃষিজমি কমে যাওয়ায় গবাদিপশুর খাদ্যের সংকট দেখা দিলে তুলাকে বেছে নেয় গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে। এতে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠা গরুগুলো অসুস্থ হয়ে অনেক সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
গাজীপুর সদর উপজেলার পিরুজালী গ্রামের গৃহবধূ জমিনা খাতুন বলেন, দিন দিন জমি কমে যাওয়ায় খড়ের অভাব পড়েছে। অপরদিকে গরু চড়ানোর জন্য মাঠ নেই। তবে তুলা এখন খুবই সহজলভ্য, তাই বাধ্য হয়ে গরুকে তুলা খাওয়াচ্ছি। এছাড়াও অনেকেই বলেছেন তুলাকে গরুর খাবার হিসেবে ব্যবহার করলে গরুর স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। ক্ষতি হয় তা আমাদের জানা ছিল না।
গাজীপুর সদর উপজেলার আলীমপাড়া গ্রামের কৃষক ইমান হোসাইন জানান, সম্প্রতি তার একটি গাভী অসুস্থ হয়ে খাবার খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিল। পরে পশু হাসপাতালের চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে গাভীর জিহ্বার নিচ থেকে তারের কুণ্ডলীর কিছু অংশ বের করে আনেন এবং গবাদিপশুর দেহের জন্য এসব তুলা ক্ষতিকর বলে জানান। তিনি খাবারের তালিকা থেকে তুলা বাদ দিতে পরামর্শ দেন।
পিরুজালী এলাকার তুলা ব্যবসায়ী জালাল উদ্দীন খান যুগান্তরকে বলেন, খামারিরা তুলা নেন তাই বিক্রি করি। আমি একা নই, এলাকার অনেকেই এসব বিষাক্ত তুলার ব্যবসা করছেন। পশুর জন্য ক্ষতিকর তা আমাদের জানা ছিল না।
গাজীপুর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সেলিম উল্লাহ খান যুগান্তর প্রতিবেদককে বলেন, পশুর একমাত্র সুষম খাদ্য ঘাস, আমরা ঘাস উৎপাদনে খামারিদের উৎসাহ দিয়ে থাকি। উপজেলায় প্রায় দেড়শ বিঘা জমিতে ঘাস চাষ হচ্ছে। তবে কারখানার পরিত্যক্ত তুলা গবাদিপশুর জন্য অখাদ্য। পশুর খাদ্যে এসব ব্যবহার করলে স্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়বে এবং গবাদিপশুর মৃত্যুর ঝুঁকিও রয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল জাকী বলেন, যারা কারখানায় নষ্ট ও উচ্ছিষ্ট তুলা মজুদ ও বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্র: যুগান্তর নিউজ