৩৭৯
তেলাপিয়া বা পাঙ্গাস মাছ চাষে খাদ্য ব্যবস্থাপনা কেমন হবে সে বিষয়ে অনেকেই জানতে চান। মাছ চাষে লাভবান হওয়ার জন্য মাছের খাদ্য ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ খাদ্য ব্যবস্থার ভিত্তিতেই মাছ চাষে লাভ নির্ভর করে থাকে। আসুন আজকে জানবো তেলাপিয়া বা পাঙ্গাস মাছ চাষে খাদ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে-
তেলাপিয়া বা পাঙ্গাস মাছ চাষে খাদ্য ব্যবস্থাপনাঃ
- রেনু অবস্হায় ৩৫%, নার্সিং কালিন সময়ে ৩০ থেকে ৩২%, মজুদ পুকুরে ১০০ গ্রাম পর্যন্ত ২৮%, ১০০ গ্রাম থেকে বিক্রয় কাল পর্যন্ত ২৬ থেকে ২৫% স্বাভাবিক গ্রোথে এই পরিমান প্রোটিনের চাহিদা থাকে।
- এখন যদি নির্দিষ্ট বয়স এবং সাইজের মাছকে সঠিক প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার টি সরবরাহ করতে না পারেন, তাহলে বাণিজ্যিক চাষাবাদে কাঙ্খিত গ্রোথ কোন দিন পাবেন না। অনেকে আবার যখন ২৮% প্রোটিন দরকার, তখন ৩০/৩৫% দিয়ে থাকেন।
- আবার কিছু চাষী ২৮% এর জায়গায় ২৬% দিয়ে থাকেন, এক্ষেত্রে দুই চাষীই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তার কারন অতিরিক্ত প্রোটিন মাছে হজম করতে পারেনা, যেটা মলের সাথে বেরিয়ে যাবে। ফলে অতিরিক্ত প্রোটিন বাবদে যে টাকা টা খরচ করলেন, সেটা অপচয় হল।
- আবার চাহিদার বিপরীতে কম প্রোটিন যুক্ত খাবার খাওয়ালে ঠিক মত গ্রোথ পাবেন না। তাই বয়স ও সাইজ নির্ণয় করে, সঠিক পরিমানের প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ানো খুবই জরুরি।
নার্সারি পুকুরের খাদ্যঃ
- ধানি থেকে ১৫শ লাইনে আসা পর্যন্ত নার্সারি পাউডার দেহের ওজনের ৪০% থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে ২০% পর্যন্ত দিয়ে যাবেন। খাবারে প্রোটিনের পরিমান হবে ৩৫ থেকে পর্যায়ক্রমে ৩০%।
- ১৫শ লাইনে ৩০% প্রোটিন সমৃদ্ধ প্রথম দানাদার ০.৫ মিলি খাবার টা দেহের ওজনের ১৫% দিয়ে শুরু করবেন, ৮শ লাইনে না আসা পর্যন্ত চলবে।
- ৮শ থেকে ৫শ লাইন পর্যন্ত ১ মিলি সাইজের খাবার দেহের ওজনের ১২% করে দিবেন।
- ৫শ থেকে ১শ লাইনে আসা পর্যন্ত ১.২/১.৫ মিলি খাবার দেহের ওজনের ১০% করে প্রয়োগ করবেন।
মজুদ পুকুরের খাদ্যঃ
- প্রথম ৭ দিন দেহের ওজনের ১০% করে ১.৫ মিলি সাইজের খাবার টি দিয়ে যাবেন।
- ৭ দিন পর পর সেম্পলিং করে খাবারের পরিমান নির্ধারণ করবেন।
- ১০ গ্রাম থেকে ৫০ গ্রামে আসা পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে দেহের ওজনের ১০% দিয়ে শুরু করে ৮% পর্যন্ত খাওয়াবেন।
- ৫০ থেকে ১০০ গ্রামে আসা পর্যন্ত ৮% থেকে পর্যায়ক্রমে ৫% করে খাওয়াবেন।
- ১০০ গ্রাম থেকে বিক্রয় অবধি পর্যায়ক্রমে ৫% থেকে ৩% পর্যন্ত পরিমাণমতো খাবার দিয়ে যেতে পারলে তবেই কাঙ্খিত গ্রোথ পাওয়া সম্ভব।
- নার্সিং কালিন সময়ে ১৫শ লাইনে আসা পর্যন্ত উল্লেখিত খাবার গুলো দৈনিক ৩/৪ বেলায় ভাগ করে দিবেন।
- ১শ লাইনে আসা পর্যন্ত ৩ বেলা এবং মজুদ পুকুরে উল্লেখিত খাবার গুলো দৈনিক ২ বেলা প্রতি দিন ঠিক একই সময়ে নির্দিষ্ট জায়গায় দিবেন।