ছাগল পালনের ক্ষেত্রে বাচ্চার পালন পদ্ধতি আমাদের দেশের অনেক ছাগল পালনকারীরাই জানেন না। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলগুলোতে ব্যাপকহারে ছাগল পালন করা হচ্ছে। ছাগল পালন দারিদ্রতা দূরীকরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে। তবে ছাগল পালনের পদ্ধতি সম্পর্কে অনেকেরই তেমন কোন ধারণা নেই। আজকে চলুন জেনে নেই ছাগল পালনের ক্ষেত্রে বাচ্চার পালন পদ্ধতি সম্পর্কে-
ছাগল পালনের ক্ষেত্রে বাচ্চার পালন পদ্ধতিঃ
ছাগল পালনের ক্ষেত্রে ছাগলের বাচ্চার পালন পদ্ধতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নিচে ছাগলের বাচ্চা পালন পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত দেওয়া হল-
সাধারণত দুই পদ্ধতিতে ছাগলের বাচ্চা পালন করা হয়ে থাকে। যথা-
১। প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে মায়ের সঙ্গে
২। কৃত্তিম পদ্ধতিতে মা বিহীন অবস্থায় পালন
প্রতিটি পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে তবে এদের প্রাকৃতিক পদ্ধতিটি প্রচলিত। সাধারণত দু’ সপ্তাহ বয়স থেকেই বাচ্চারা কাঁচা ঘাস বা লতাপাতা খেতে শুরু করে। তাই এদের নাগালের মধ্যে কচি ঘাস , লতা পাতা এবং দানাদার খাদ্য রাখতে হয়। সময় বাচ্চাদের জন্য প্রচুর উন্মুক্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
গ্রীষ্মকালে দিনের বেলা গাছের নিচে বেড়া দিয়ে বাচ্চা পালন করা যায়। এতে এরা একদিকে পর্যাপ্ত ছায়া পেতে পারে। অন্যদিকে দৌড়াদৌড়ি এবং ব্যায়াম করার প্রচুর সুযোগ পায়, যা তাঁদের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য প্রয়োজন। প্রতিটি বাচ্চা ছাগলকে জন্মের প্রথম সপ্তাহে দৈনিক ৩০০-৩২৫ মিলি দুধ ৩ থেকে ৪ বারে পান করাতে হবে।
ধীরে ধীরে দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি করে ৬ থেকে ৭ সপ্তাহে তা ৭৫০ থেকে ৮৫০ মি.লি দুধ কিভাবে পাবে? দুধের বিকল্প খাদ্য ৩ সপ্তাহ বয়সের পর খেতে দেয়া যেতে পারে । ১০-১১ সপ্তাহে দৈনিক দুধ সবরাহের পরিমাণ ২০০-১০০ মি.লি. নামিয়ে আনতে হবে । এ সময় দৈনিক ১০০-১৫০ গ্রাম দানাদার খাদ্য ও প্রচুর কচি ঘাস, লতাপাতা সরবরাহ করতে হবে । ৩-৪ মাস বয়সে দুধ পান করানো পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে হবে। কারণ এ সময় শক্ত খাদ্যদ্রব্য খাওয়ার জন্য বাচ্চার পাকস্থলী পুরোপুরিভাবে তৈরি হয়ে যায় ।
১। মায়ের দুধের পরিমাণ কম এমন বাচ্চাকে বোতলে অন্য ছাগলের দুধ বা বিকল্প দুধ (মিল্ক রিপে−সার) খাওয়াতে হবে। এক্ষেত্রে হালকা গরম (৩৮-৩৯০সে. তাপমাত্রার) দুধ খাওয়ানো উচিত।
২। শীতের সময়ে বাচ্চাকে মায়ের সাথে রাখতে হবে। এ সময় ঘরের তাপমাত্রা ২৫-২৮০সে. থাকলে ভালো হয়।বোতলের সাহায্যে মিল্ক রিপে−সার খাওয়ানো হচ্ছে
৩। বাচ্চা যেন অতিরিক্ত দুধ না খেতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অতিরিক্ত দুধ খাওয়ার ফলে বাচ্চার ডায়রিয়া হতে পারে যা অনেক সময় মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
৪। পাঁঠার জন্য সবচেয়ে ভালো ছাগলের পুরুষ বাচ্চা নির্বাচন করতে হবে এবং যত্ন নিতে হবে। যেসব পুরুষ বাচ্চা প্রজনন কাজে ব্যবহৃত হবে না তাদেরকে ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে খাসী করাতে হবে।
৫। প্রতিদিন কিছু পরিমাণ কাঁচা ঘাস বাচ্চাকে খাওয়ানোর অভ্যাস করাতে হবে। এর ফলে প্রয়োজনীয় ভিটামিনসহ অন্যান্য খাদ্য উপাদানের অভাব হবে না। সূত্র – আধুনিক কৃষি খামার