শেরপুরে ভ্রাম্যমাণ হাঁসের খামারে কৃষক খোকা আকন্দের সাফল্য। তিনি আশেরপাশের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে ভাসমান পদ্ধতিতে হাঁসের খামার পরিচালনা করেন। ভ্রাম্যমান হওয়ায় খামার পরিচালনা করতে তার কম পুঁজি লাগে। এতে তিনি হাঁস পালনে আর্ধিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পেরেছেন।
জানা যায়, কৃষক খোকা আকন্দ শেরপুরের ধুনট উপজেলার সাপরজানি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পড়াশোনা না করতে পারলেও কৃষি কাজ দিয়ে রোজগার করা শুরু করেন। তবে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে ফসলের ক্ষতি হওয়ায় তিনি আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল হয়ে পড়েন। তারপর তিনি হাঁসের খামার গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেন। বর্তমানে তিনি মাসে গড়ে প্রায় ৪০-৫০ হাজার টাকা আয় করতে পারেন। তার দেখাদেখি অনেকেই খামার করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।
খামারি খোকা আকন্দ বলেন, ভ্রাম্যমাণ হাঁসের খামারে খরচ কম। এক জায়গায় খামার করতে হয় না বলে পুঁজি কম লাগে। শুধু হাঁস কেনা ও তার পালনে যা ব্যয় হয় সেটাই বিনিয়োগ করতে হয়।
তিনি আরো বলেন, আমি প্রথমে কৃষি কাজ করতাম। ফসল নষ্ট হয়ে ক্ষতি হওয়ায় আর ধানের চাষ করিনি। তারপর ১৫ হাজার টাকায় ৬০০ ক্যাম্বেল প্রজাতির হাঁসের বাচ্চা কিনে খামার শুরু করি। নদী-খাল-বিলে চরিয়ে ঘুরে ঘুরে খাবার খাওয়াতে হয়। আর রাতে অস্থায়ী ঘেরে হাঁসগুলোকে রাখা হয়। কয়েকদিন পরপরই খাবারের সন্ধানে বিভিন্ন এলাকায় হাঁসগুলোকে নিয়ে যাই। এতে প্রকৃতিক খাবার খায় যাতে কোনো খরচ নেই।
খোকা আকন্দ আরো বলেন, খামার পরিচালনায় আমার স্ত্রী সন্তানরা সহযোগিতা করেন। প্রতি ৪ মাস পরিচর্যাতেই হাঁসগুলো ডিম দিতে শুরু করে। বর্তমানে এই খামার থেকে আমার মাসে প্রায় ৪০-৫০ হাজার টাকা আয় হয়।
স্থানীয়রা বলেন, অন্যান্য খামারিদের থেকে খোকার হাঁস পালনের পদ্ধতি একেবারে ভিন্ন। তার এখানে অনেকেই এই ভাসমান খামার দেখতে আসেন। আমারো এমন একটি খামার করার ইচ্ছা আছে।
ধুনট উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাবিল ফারাবি বলেন, ভ্রাম্যমান খামার পদ্ধতি একটি লাভজনক মাধ্যম। অন্যান্য খামারে হাঁসের খাবার বাবদ অনেক টাকা খরচ হয়। আর এই পদ্ধতিতে খাবারের কোনো খরচ নেই। হাঁসগুলো প্রাকৃতিক ভাবে খাবার সংগ্রহ করে খায়। আর সারাক্ষণ খোলামেলা পরিবেশে থাকায় হাঁসের ডিম দেওয়া আরো বেড়ে যায়। আমরা খামারিদের ভ্যাকসিন, পরামর্শ সহ সব ধরনের সহযোগিতা করবো।