পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে হাওরবেষ্টিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় ৩০০ বছরের প্রাচীন শুঁটকি মেলায় ভিড় করছেন ক্রেতারা। তবে শুঁটকিসহ পণ্যের মূল্য ঊর্ধ্বগতির কারণে মেলায় ঐতিহ্যে কিছুটা ভাটা পড়েছে। তারপরও দিনব্যাপী এ মেলায় অন্তত তিন কোটি টাকার পণ্য বেচাকেনা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) সকালে সরেজমিনে কুলিকুণ্ডা গ্রামের উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ওই শুঁটকি মেলায় গিয়ে দেখা যায়, মিঠা পানি মাছ- শোল, বোয়াল, গজার, টেংরা, পুঁটিসহ বিভিন্ন ধরনের মাছের শুঁটকির পসরা নিয়ে বসেছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা দোকানিরা। ঐতিহ্যবাহী এই শুঁটকি মেলাকেন্দ্র করে আশপাশের জমিতে বসেছে লোকজ মেলা। মেলায় সার্বিক বেচাকেনা ভালো হওয়ায় খুশি দোকানিরা।
মেলায় শুঁটকি নিয়ে আসা দোকানি কৃষ্ণদাস জানান, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে হ্রাস পেয়েছে ঐতিহ্যবাহী পণ্যবিনিময় প্রথা। অথচ এক বছর আগে এই প্রথা চালু ছিল। এখন নামে মাত্র এই প্রথা চালু আছে।
তিনি আরও জানান, দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে বিনিময় প্রথায় আগ্রহী হন না অনেকে। তাই এ মেলার ঐতিহ্য হারিয়েছে।
বাজারে আসা ক্রেতা মো. মহব্বত আলী বলেন, প্রাচীনকালে যখন কাগজের মুদ্রা প্রচলন হয়নি ঠিক তখন থেকে কৃষকরা তাদের সদ্য উৎপাদিত ফসলের বিনিময়ে বেচাকেনা করতেন। বিশেষকরে শুঁটকি ছিল তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য। তবে কালের বিবর্তনে এই মেলার জৌলুস অনেকটাই হারিয়েছে। শুধু তাই নয় হারিয়েছে চিরচেনা বিনিময় প্রথাও। তারপরেও ঐতিহ্য হিসেবে এই মেলায় শুঁটকি কেনার জন্য এসেছি। যেমনটি বাবার হাত ধরে এই মেলায় আসতাম।
মেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ওহাব আলী জানান, বিনিময় প্রথার ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্যে আজও অল্প পরিসরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কিছুক্ষণের জন্যে পণ্যবিনিময়ের মধ্যে দিয়ে শুঁটকি বেচাকেনা শুরু হয়। পরে চলে টাকার অর্থে বেচাকেনা।
তিনি জানান, এই পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে নাসিরনগর সদর উপজেলার কুলিকুণ্ডা গ্রামের স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠসহ আশপাশের সদ্য ধান কাটা ফসলি জমিতে বসেছে ঐহিত্যবাহী শুঁটকি মেলা। মুঘল আমল থেকে ঐতিহ্যবাহী এ মেলা হয়ে আসছে।
মোট চার একর জমি ওপর বসেছে এ মেলা। এ মেলায় শুঁটকির দোকান ছাড়াও অন্তত তিন শতাধিক দোকান রয়েছে।
সূত্র. সময় সংবাদ