মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বিদেশি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের দেশে অবস্থানের সময় পাকিস্তানি প্রেতাত্বাদের কেউ কেউ মাথাচাড়া দিয়ে উঠার চেষ্টা করছে।
শনিবার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ উপলক্ষে পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভায় রাজধানীর বেইলি রোডের সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, “স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এ সময়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। এমন একটি চমৎকার সময়েও দেশের অভ্যন্তরে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ানোর জন্য পাকিস্তানি প্রেতাত্বাদের কেউ কেউ মাথাচাড়া দিয়ে উঠার চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা ভুলে গেছে এ বাংলাদেশ রাম-রহিমের বাংলাদেশ, এ বাংলাদেশ হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানের বাংলাদেশ। এ বাংলাদেশে ধর্মের ঊর্ধ্বে গিয়ে আমাদের একটি পরিচয় আছে। সে পরিচয়, আমরা বাঙালি, আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। এ বাংলাদেশে নতুন করে যদি কেউ ধর্মীয় উসকানি সৃষ্টি করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চায় তাদেরকে কঠোরভাবে দমন করা হবে। কোনোভাবেই এ বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে দেওয়া হবে না।”
শ ম রেজাউল করিম বলেন, “ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম অপর ধর্মে আঘাত করায় বিশ্বাস করে না, অপর ধর্মাবলম্বীদের অধিকারে হস্তক্ষেপ করায় বিশ্বাস করে না। এই শান্তির ধর্ম ইসলামের নাম ব্যবহার করে যারা ’৭১ সালে লুণ্ঠন করেছে, ধর্ষণ করেছে, জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করেছে তাদের চেহারা আমরা চিনি। তাদের প্রেতাত্বারা আবার মাথাচাড়া দেয়ে উঠার চেষ্টা করছে। যুদ্ধাপরাধী, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর বিচার শেখ হাসিনা করেছেন। প্রয়োজনবোধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের কঠোর বিচারের মুখোমুখি করা হবে। শান্তির বাংলাদেশকে কোনোভাবে ধ্বংস করতে দেওয়া হবে না।”
স্বাধীনতার ৫০ বছরে দেশের উন্নয়নচিত্র তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, “১৯৭২ সালে আমাদের অর্থনীতির আকার ছিল ০.৫৮ বিলিয়ন ডলার যা আজ ৩৪৮ বিলিয়ন ডলার, মাথাপিছু আয় ছিল ১২৯ ডলার যা বর্তমানে ২০৬৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে, দারিদ্র্যের হার ছিল ৮৮ শতাংশ যা আজ ২০ শতাংশে নেমেছে, গড় আয়ু ছিল ৪৭ বছর যা এখন ৭২.৬ বছর, শিক্ষার হার ছিল ২০.৯ শতাংশ যা আজ ৭২.৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের প্রশংসা করে বলেছেন, যেভাবে বাংলাদেশকে শেখ হাসিনা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, এটা বিশ্বের বিস্ময়। পৃথিবীর অনেক রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এসময় বাংলাদেশে এসেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনসহ অনেকেই বাংলাদেশের বিস্ময়কর উন্নয়নের প্রশংসা করেছেন। সারাবিশ্ব বলছে ঈর্ষা করার মতো উন্নয়ন বাংলাদেশ করতে পারছে।
নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারেফ হোসেনের সভাপতিত্বে নেছারাবাদ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হক, ভাইস চেয়ারম্যান রনি দত্ত, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. বশির গাজী, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. ফিরোজ কিবরিয়া, নেছারাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবির মোহাম্মদ হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কাজী সাখাওয়াতসহ অনেকেই আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন।
Source: agriview24.com