হবিগঞ্জের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে রয়েছে হাওর-বাঁওড়। যা মাছের বড় একটি উৎস। কিন্তু হাওরের রূপ বদলে গেছে। সংকুচিত হয়েছে হাওর। ফলে দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রাকৃতিক আবাসস্থলও সংকুচিত হওয়ায় মাছ চাষ করা হচ্ছে।
জেলার বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলা মাছের বড় একটি উৎস। এ সময় এখানকার হাওরের মাছ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হতো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাওরে মাছ হারিয়ে গেছে। এখানকার হাওরে মাছ তেমন পাওয়া যায় না। যশোর অঞ্চল থেকে আনা ও পুকুরে চাষ করা মাছই ভরসা।
হাওরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, কিছুদিন আগেও বর্ষায় যে জমিতে ১০-১২ ফুট পানি হতো, এখন সে জমি শুকনো। হাওরে পানি না আসার কারণ হিসেবে কুশিয়ারার কৈয়ার ডালা বাঁধকে দায়ী করছেন কৃষকেরা। কৈয়ার ডালায় স্লুইসগেট করার কথা থাকলে ও স্লুইসগেট না করে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। বানিয়াচং উপজেলার নদীগুলো মেঘনার মোহনায় পলি পড়ে ভরাট ও অপরিকল্পিত বাঁধ দেওয়ায় মাছ আজ বিলুপ্তির পথে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পুকুরে চাষ করা শিং মাছ কেজিপ্রতি ৫০০, পাঙাশ ১৯০, তেলাপিয়া ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। দেশি প্রজাতির হাওরের মাছ টাকি (ছোট) ৪০০ টাকা কেজি। কিছু ট্যাংরা মাছ বাজারে দেখা গেছে। ভাগ ভাগ করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। প্রতি ভাগ ৬০০ টাকা। ট্যাংরা মাছের কেজি কত জানতে চাইলে বিক্রেতা ১ হাজার টাকার কমে বিক্রি করবেন না বলে জানান। দুই বছর আগেও ট্যাংরা মাছ বাজারে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করেছেন বলে জানান মাছ বিক্রেতা।
বাজারে কথা হয় শ্রমজীবী সবুজ মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কাজ করে ৪০০ টাকা পেয়েছি। পরিবারের সদস্য ছয়জন। ১৯০ টাকায় ১ কেজি পাঙাশ ও ৫০ টাকায় ১ কেজি আলু কিনলাম। বাকি টাকার চাল কিনব।’
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওয়াহিদুর রহমান মজুমদার বলেন, একসময় হবিগঞ্জের হাওরগুলোতে বর্ষা মৌসুমে অনেক পানি হতো। এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় হাওরে তেমন পানি হয়নি। মা মাছ ডিম না দেওয়ায় এবার দেশীয় মাছ কম হওয়ায় কারণ।
সূত্র: আজকের পত্রিকা।