মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ বলেছেন, গত কয়েক বছরের মতো এবারও দেশের পশুতেই কোরবানির প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আসন্ন কোরবানিতে ১ কোটি ২৫ লাখ কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত আছে। ফলে বিদেশি পশুর ওপর নির্ভর করতে হবে না। ব্যবসায়ী ও খামারিদের স্বার্থে ভারত ও মিয়ানমার থেকে অবৈধ পথে গরু প্রবেশে সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। বন্ধ আছে মাংস আমদানিও। পাশাপাশি খামারিদের ব্যবসা নির্বিঘ্ন করতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শনিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার সাদিক এগ্রো পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেনসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ড. নাহিদ রশীদ বলেন, গত ঈদুল আজহার চাইতে বেশি কোরবানিযোগ্য পশু এবার প্রস্তুত রয়েছে। এখন পর্যন্ত খামারি ও প্রান্তিক চাষীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত রয়েছে। এই সংখ্যা বাড়তে পারে। এবার দেশের বাইরে থেকে কোনো পশু আমদানির প্রয়োজন হবে না। তাই আমরা সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছি। এজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে, যেন বাইরে থেকে কোনো পশু না প্রবেশ করে।
খামারিদের দাবির প্রেক্ষিতে ঈদের আগে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কোরবানির পশুবিক্রেতা বা খামারি পর্যায়ে কেউ যেন অযথা হয়রানি বা চাঁদাবাজির শিকার না হন সেজন্য জাতীয় জরুরি সেবার হটলাইন নম্বর-৯৯৯ যুক্ত করার বিষয়ে আশ্বাস দেন সচিব। এর বাইরে অন্য কোনো হটলাইন নম্বর যুক্ত করার প্রয়োজন থাকলে সেটিও আগামী ১৪ জুন আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান তিনি।
পশুখাদ্যের দাম কমানোর বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. এমদাদুল হক তালুকদার বলেন, ইতোমধ্যে পশুখাদ্যের দাম কিছুটা কমাতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রচুর ঘাস উৎপাদন হচ্ছে। ফলে দাম অনেকটা কমাতে সক্ষম হয়েছি। আগামী দুই-তিন মাস পর থেকে খাদ্যদ্রব্যের দাম আরও কমিয়ে আনতে সক্ষম হবো বলে আশা করছি।
খামার থেকে কেনা পশুর জন্য হাসিলমুক্ত রাখার বিষয়টি মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারির অনুরোধ জানান বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন। তিনি বলেন, পশু ঢাকায় বা বিভিন্ন জেলা শহরে নিতে গেলে চাঁদা দিতে হয়। এ চাঁদা দিতে গিয়ে গরুম দাম বেশি হচ্ছে। এছাড়া খামারে বিক্রি হওয়া গরু কোনো হাটের কাছ দিয়ে গেলে ক্রেতাকে নাজেহাল হতে হয়। এদিকে সিটি করপোরেশন ঢাকায় থাকা খামারগুলো বাইরে নেওয়ার তাগাদা দিচ্ছে। ফলে আমরা কয়েক হাজার খামারি বিপদে আছি।
এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া আশ্বাস দেন সচিব। আগামী ১৪ জুন আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় বিষয়টি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি খামারিদের উন্নয়নে ডেইরি উন্নয়ন বোর্ড গঠনের প্রস্তাব সংসদে পাস হওয়ার অপেক্ষায় আছে বলেও জানান সচিব।
সূত্র: সমকাল ।