গলাছিলা মুরগি একটি পুরানো দেশি মুরগীর জাত। প্রাকৃতিকভাবে এদের গলা,ঘাড় ও ভেন্ট (প্রজননতন্ত্র) পালকবিহীন থাকে। গলাছিলা মুরগীর উদ্ভব কোথায় হয়েছিলো তা এখনো অস্পষ্ট, মনে করা হয় যে, এই জাতটি এশিয়া থেকে হাঙ্গেরিয়ানদের দ্বারা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে যায় নবম শতাব্দির দিকে। এই মুরগীর জাত সারা পৃথিবীতে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। টার্কেন, কালেনেক, ট্রান্সিলভেনিয়ান নেকেড নেক মুরগি ইত্যাদি।
আমাদের দেশে এটি প্রাচীন কাল থেকেই দেখা যায়। তবে কুমিল্লা বা ময়নামতি অঞ্চলে এদের প্রাথমিক আবাস হিসেবে ধারণা করা হয়। বর্তমানে অনেক খামারী জাতটিকে দেশি মুরগি হিসেবে খামারে লালন-পালন করে থাকেন।
- অনেকে এই জাতটিকে মুরগির একটি সংকর এবং টার্কি হিসেবে ভাবেন। তবে এটি সত্য নয়, বরং এগুলি খাঁটি মুরগীর জাত। বাংলাদেশের সিলেট ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা যায়।
গলা ছোলা মুরগীর বৈশিষ্ট্যাবলী :
- এদের লম্বা গলায় কোন পালক থাকে না।
- এদের চামড়া হলুদ বা লাল রঙের হয়।
- পালকের রং সাদা কালোর মিশ্রণ বা লাল সহ বিভিন্ন রং এর হয়।
- এদের দেখতে ছোট আকারে টার্কি মোরগ বলে মনে হয়।
- ওয়াটিল বেশ বড় ও লাল রঙের।
- এদের পা মোটা ও শক্ত।
- এই মুরগীর ডিমের খোসা সাদা।
- ডিমে ‘তা’ দেয় এবং বাচ্চার ভালো যত্ন নেয়।
- অন্য দেশি মুরগীর তুলনায় আগে (180 দিনে) ডিম আসে।
- বছরে 90-120 টি ডিম দেয় এবং ডিমের ওজন 40 গ্রাম।
- মোরগের ওজন 1.5-2.25 কেজি এবং মুরগির ওজন 1.2-1.5 কেজি।
দেশি মুরগীর খুবই কমন একটি জাত। নাম শুনেই বোঝা যায় এই মুরগির গলায় লোম বা পালক থাকে না। এদের পালকের রং কালো ও লালচে কালো হয়ে থাকে। এরা পালকহীন পা, হোলদে চামড়া ও একক ঝুটি বিশিষ্ট হয়ে থাকে।
গলাছিলা মুরগীর কানের লতি সাধারণত লাল ও সাদার সংমিশ্রণ যুক্ত হয়। এদের পায়ের রং হলুদ ও সাদা বা কালো রঙেরও হয়ে থাকে। এদের ডিমের রং হালকা বাদমী। এই মুরগি খুব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন হয়। দেশি মুরগি পালন করার ক্ষেত্রে গলািছিলা মুরগীর সকলের কাছে প্রথম পছন্দ হতে পারে।