সামছুল আলম
বাংলাদেশে এই প্রথম শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একোয়াকালচার বিভাগ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি কম খরচে অধিক উৎপাদনশীল রিসারকুলেটিং একোয়াকালচার সিস্টেম (রাস) পদ্ধতিতে মাছ চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এ পদ্ধতিতে বিদ্যমান মাছ চাষের চেয়ে ৮০-১০০ গুন বেশি মাছ উৎপাদন সম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এ ধরনের আধুনিক মাছ চাষ প্রযুক্তি নিয়ে এটিই প্রথম গবেষণা, যেখানে গবেষকগণ আগামী শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশীয় প্রযুক্তিতে যন্ত্রাংশ তৈরি করে কম খরচে আধুনিক মাছ চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন।
কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) অর্থায়নে নির্মিত শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা মাঠে স্থাপিত এস এ ইউ রাস (SAU RAS) নামক নতুন প্রযুক্তিটির শুভ উদ্বোধন ও প্রকল্পটি উদ্যোক্তাদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ, একোয়াকালচার ও মেরিন সাইন্স অনুষদের ডিন কনফারেন্স হলে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্স সিস্টেমের (সাউরেস) পরিচালক প্রফেসর ড. মো. অব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে এ বিষয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ, একোয়াকালচার ও মেরিন সাইন্স অনুষদের ডিন ও প্রকল্পের পিআই প্রফেসর ড. এ এম সাহাবউদ্দিন।
মাছ চাষের যান্ত্রিকিকরণ জন্য আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় প্রযুক্তিতে বিদ্যমান সম্পদ ব্যবহার করে কম খরচে আধুনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ওপর বক্তারা আলোচনা করেন। প্রকল্পে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনিস্টিটিউট সহযোগী সংস্থা হিসেবে সৌর চালিত পাম্প এবং সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করে মাছ চাষের খরচ কমানোর বিষয়ে কাজ করছে।
প্রকল্পের পিআই প্রফেসর ড. এ এম সাহাবউদ্দিন জানান, জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে টেকশই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য মাছ চাষের আধুনিকায়ন ও যান্ত্রিকিকরণ এখন সময়ের দাবি। আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর মাছ চাষে জৈব নিরাপত্তা সঠিকভাবে রক্ষা করা যায় এবং বিদ্যমান মাছ চাষের চেয়ে ৮০-১০০ গুন বেশি মাছ উৎপাদন সম্ভব। তাছাড়াও দেশীয় সম্পদ ও কারিগরে দক্ষতা ব্যবহার করে উৎপাদিত প্রযুক্তি অমদানিকৃত প্রযুক্তির অর্ধেকের ও কম মূল্যে পাওয়া সম্ভব।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. মো. শহিদুর রশিদ ভূঁইয়া বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কৃষি ক্ষেত্রে নতুন নতুন গবেষণা ও আধুনিকায়নের কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন বাংলাদেশ মাছ চাষে বর্তমানে স্বয়ংসম্পূর্ণ এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে গবেষণার মাধ্যমে মাছ চাষের খরচ কমিয়ে নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের হাতে তুলে দিতে হবে।
উদ্ভাবন অনুষ্ঠানে অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শহিদুর রশিদ ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (পরিকল্পনা ও জরিপ) মো. আতাউর রহমান খাঁন, কিজিএফের নির্বাহী পরিচালক ড. নাথুরাম সরকার ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম।