হেমন্তের পূব আকাশে তখনো উঁকি দেয়নি সূর্য। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে কানায় কানায় পূর্ণ পাবনার রুহুল বিল। কুয়াশার চাদর ভেদ করে একে একে সবাই নামছেন বিলে। এ যেন শৌখিন মাছ শিকারিদের মিলন মেলা।
কারো হাতে পলো, কারো হাতে জাল। সবার হাতেই মাছ ধরার কোন না কোন উপকরণ। প্রতিবছর ডিসেম্বরে সপ্তাহে দুই দিন করে চলে মাছ ধরার এই উৎসব। আঞ্চলিক ভাষায় যাকে বলা হয় বাউত উৎসব।
পাবনার ভাংগুড়া উপজেলার রুহুল বিলে ডিসেম্বর মাসব্যাপী চলে এই মাছ ধরা উৎসব। স্থানীয়রা এই উসবের নাম দিয়েছেন বাউত ইতসব। প্রতিবছর ডিসেম্বর মাসের শনি ও মঙ্গলবার হয় এ আয়োজন। এসময় মাছ ধরতে একসঙ্গে বিলে নেমে পড়েন ছোট বড় হাজার হাজার মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, শুধু পাবনা নয়; আশেপাশের বিভিন্ন জেলার মানুষও যোগ দেন মাছ ধরার প্রাণের এই উৎসবে। দল বেঁধে বিলের পানিতে নেমে আনন্দ উপভোগ করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য। তবে দিন দিন খাল বিল ছোট হয়ে আসায় হতাশা আছে তাদের কণ্ঠে।
বাউত উৎসবের অতীত ঐতিহ্য ধরে রাখতে নানা উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন, স্থানীয় প্রশাসন। অন্যদিকে খাল বিলের পরিধি বাড়ানো ও মাছের অভয়াশ্রম তৈরি করাসহ বর্ষাকালে খাল বিলে মাছ ছাড়ার দাবি জানান স্থানীয়রা।
গ্রামীণ এই ঐতিহ্য যেন হারিয়ে না যায়, সে জন্য প্রশাসন আরও তৎপর থাকবে এমন আশা সংশ্লিষ্টদের। এছাড়াও গ্রামবাংলার ঐতিহ্য এই বাউত উৎসবকে টিকিয়ে রাখতে খাল-বিল ও জলাশয় খনন করে প্রাকৃতিক অভয়াশ্রম গড়ে তোলার দাবী স্থানীয়দের।