পিপিআর ছাগলের একটি মারাত্মক ভাইরাস জনিত রোগ। আক্রান্ত এলাকায় ১০০ ভাগ পর্যন্ত ছাগল এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। পিপিআর রোগে আক্রান্ত ছাগলের মৃত্যুর হার শতকরা ৫০-৮০ ভাগ। সব বয়সের ছাগল এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে, এবং এক বছরের কম বয়সের ছাগল এ রোগে অতিমাত্রায় আক্রান্ত হয়ে থাকে। বাংলাদেশে পিপিআর রোগে প্রতি বছর ছাগলের মৃত্যুর হার শতকরা ১১ ভাগ। তাই ছাগল উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য পিপিআর রোগ দমন করা খুবই জরুরি।
ছাগলের পিপিআর রোগের লক্ষলসমূহ ঃ
ছাগলের শরীরের তাপমাত্র ১০৫-১০৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট হয়ে থাকে।
আক্রান্ত ছাগলের নাক, চোখ এবং মুখ দিয়ে প্রথমে পানির মতো তরল পদার্থ বের হয়, পরে তা গাঢ় ও হলুদ বর্ণ ধারণ করে। পরবর্তীতে ঐ তরল পদার্থ শুকিয়ে গিয়ে চোখ ও নাক বন্ধ হয়ে যায় এবং আক্রান্ত ছাগলের শ্বাসকষ্ট দেখা যায়।
আক্রান্ত ছাগলের খাওয়ার রুচি কমে যায়, এই রোগের মাত্রা বৃদ্ধি হলে ছাগল খাওয়া বন্ধ করে দিতে পারে।
আক্রান্ত ছাগলের মাড়িতে, মুখের ভেতরে , চোয়ালে এবং জিহ্বায় ঘা হয়। এছাড়াও নাক, ভালভাসহ যোনিনালীর মধ্যে ঘা হতে পারে।
পরবর্তীতে নিউমোনিয়া দেখা দেয় এবং কাশিও হতে পারে।
উপযুক্ত চিকিৎসা না দিলে পিপিআর রোগে আক্রান্ত ছাগল ৪-১০ দিনের মধ্যে মারা যেতে পারে।
ছাগলের পিপিআর রোগের ভ্যাকসিন প্রদান পদ্ধতি ঃ
প্রথমে ১০০ সিসি ডায়লুয়েন্ট থেকে সিরিঞ্জ দিয়ে ১ সি.সি ডায়লুয়েন্ট নিয়ে ভ্যাকসিন ভালোভাবে গুলাতে হবে। তারপর উক্ত গুলানো ভ্যাকসিন ১০০ ডায়লুয়েন্ট বোতলে স্থানান্তর করে ভালোভাবে মিশাতে হবে এবং ফ্লাঙ্কে বরফের মধ্যে রাখতে হবে।
প্রতিটি ছাগলের জন্য ১ মি.লি মাত্রায় কাঁধের চামড়ার নিচে টিকা প্রদান করতে হবে।
ছাগল গর্ভাবস্থায় থাকলে, শেষ ২১ দিনে কোন প্রকার টিকা প্রদান করা যাবে না।
ছাগলের বাচ্ছার বয়স ৪ মাস হলে তাদেরকে অবশ্যই ভ্যাকসিন দিতে হবে। প্রাথমিকভাবে ২ মাস বয়স হলেও ভ্যাকসিন প্রদান করা যেতে পারে, তবে সে ক্ষেত্রে ৬ মাস পর বোস্টার ডোজ অবশ্যই দিতে হবে।
ভ্যাকসিনের সতর্কতা সম্পর্কে জেনে নেই ঃ
অসুস্থ বা পুষ্টিহীনতায় আক্রান্ত ছাগলকে পিপিআর ভ্যাকসিন না দেয়াই উত্তম।
একত্রে রাখা সব ছাগলকে এক সাথে টিকা প্রদান করতে হবে।
ছাগল ক্রয়ের পূর্বে অবশ্যই ফার্মের বা এলাকার সব ছাগলকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্বন্ধে নিশ্চিত হয়ে ছাগল ক্রয় করতে হবে।