বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দুধ উৎপাদনকারী গাভী হোলস্টাইন ফ্রিজিয়ান। এখন পর্যন্ত দুধ উৎপাদনের যত রেকর্ড আছে, সবই এই জাতের গাভী দখলে।
মাংসের বাজারেও এদের রয়েছে সরব উপস্থিতি। সারা বিশ্বে মোট উৎপাদিত দুধের প্রায় ৫০ শতাংশ এই জাতের গরু থেকে পাওয়া যায়।
একে শুধু দুধ উৎপাদনকারী গাভী হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও এই জাতের ষাঁড়ও বৃহৎ আকৃতির হয়ে থাকে। এই জাতের এক একটি পূর্ণবয়স্ক ষাঁড়ের ওজন ৭০০ থেকে এক হাজার কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। আর এক একটি গাভীর উচ্চতা প্রায় ৫৫ থেকে ৭০ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
হোলস্টাইন অর্থ সাদা-কালো ডোরাকাটা আর স্থানের নাম ফ্রিজল্যান্ডের সঙ্গে মিলিয়ে এই গরুর নাম হয় হোলস্টাইন ফ্রিজিয়ান। জাতের গরুর আধিনিবাস জার্মানিতে। মূলত জার্মানির কালো জাতের গরু এবং নেদারল্যান্ডের সাদা জাতের গরুর সংকরায়ণের মাধ্যমে সৃষ্টি হয় যুগান্তকারী এই নতুন জাতের গরু।
সাদা-কালো মিশেলের জন্ম নেয়ায় এই গরুর দুধ উৎপাদনের সক্ষমতা সবাইকে চমকে দেয়। এই জাতের গরু এখন আর শুধু জার্মানির আর নেদারল্যান্ডের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। পাশাপাশি তৈরি করেছে খ্যাতিও। বর্তমান বিশ্বে হোলস্টাইন ফ্রিজিয়ানের সঠিক সংখ্যা কত তা জানা যায় না।
তবে ১৯৯০ সালে শুধু আমেরিকায় নিবন্ধনকৃত এই গরুর সংখ্যা ছিল ৪০ মিলিয়নেরও বেশি।
এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ায় পালনকৃত এক দশমিক ছয় মিলিয়ন ডেইরি গরুর প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশই হোলস্টাইন ফ্রিজিয়ান।
লাতিন আমেরিকা থেকে নিউজিল্যান্ড, কানাডা থেকে রাশিয়া পর্যন্ত পৃথিবীর এমন কোনো গরু পালনকারী ভূখণ্ড নেই, যেখানে কালো সাদা জাতের গরু ব্র্যান্ডিং হয়নি।
তবে সর্বোচ্চ সংখ্যায় পালনকারী দেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, ইংল্যান্ড, কেনিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ভারত। বিশাল দেহি এই নরম জাতের এবং দুর্বল হজম ক্ষমতার গরু হিসেবে পরিচিত হোলস্টাইন ফ্রিজিয়ান।
এরা সাধারণত সাদা খর বিশিষ্ট হয়ে থাকে। মাথার উপরে সাদা টিক দেখে সহজে সনাক্তযোগ্য হলেও বিশুদ্ধ কালো জাতের গরু ও দেখা যায়।
এই জাতের গরুর জীবনকাল ছোট হওয়ায় দুধ উৎপাদনের সময়ও কম। ইংল্যান্ডের এই জাতের গরুর গড় জীবনকাল ১২ থেকে ১৪ বছর হয়ে থাকে। এরা বাচ্চাপ্রদান গড়ে পাঁচটি। একটি হোলস্টাইন ফ্রিজিয়ানগরুর বাচ্চার ওজন ৪০ থেকে ৬০ কেজি পর্যন্ত হয়।