মোঃআল আমিন(কুমিল্লা)
কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার মৎস্য চাষে সফলতার মুখ দেখছেন মো:আবু তাহের ।কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার ভেকিনগর গ্রামের এক মুসলিম পরিবারে জন্ম তার ।চাকরি না পেয়ে বেকার জীবন থেকে মুক্ত হতে নিজ অর্থ আর নিজ উদ্যোগে তিন মাছ চাষ করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন এজন্য তিনি ২০০৪ সালে নিজের ১টি পুকুরে মিশ্র মাছ চাষ শুরু করেন । প্রাথমিক ভাবে লাভবান হওয়ায় তিনি মাছ চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং ৬০শতাংশ,৭০শাতাংশ এবং ৯০শতাংশের আরও তিনটি পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করেন।
বর্তমানে আবু তাহেরের হিমালয় ও সুগন্ধা নামে দুই টি মৎস্য প্রজেক্ট রয়েছে । হিমালয় প্রজেক্ট টি প্রায় ৪০০কানি এবং সুগন্ধা প্রজেক্ট টি ২৫০কানি । তার প্রজেক্ট কে কেন্দ্র করে ১০জন লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে তার মধ্যে হিমালয় প্রজেক্টে ৬ জন ও সুগন্ধা প্রজেক্টে ৪ জন একজন ম্যানেজার সহ আরও ৪জন নৈশ্য প্রহরী রয়েছে।
মাছকে নিয়মিত সকাল ও বিকাল দুইবার খাদ্য প্রদান করেন এবং মাছের স্বাস্থ্য পরিক্ষা করেন ,প্রতি দুই মাস অন্তর অন্তর জাল দিয়ে মাছ ধরে মাছের ওজন ও খাদ্য প্রয়োগ ঠিক আছে কিনা তা পর্যবেক্ষন করেন । মাছের খাদ্য হিসাবে কোয়ালিটি ভাসমান ফিস ফিড ব্যবহার করেন।তার খামার বৃহৎ হওয়ায় খাদ্য প্রদানের সুবিধাতে নৌকা দিয়ে খাদ্য প্রয়োগ করেন। তিনি বলেন দুটি প্রতিদিন হিমালয় প্রজেক্টে ৫টন এবং সুগন্ধা প্রজেক্টে ৩ টন খাদ্য প্রদান করেন ।
বর্তমানে তার মৎস্য খামারে রুই, কাতলা, সিলভার কার্প,পুটি, গ্রাস কার্প, তেলাপিয়া সহ অন্যান্য প্রজাতির মাছ ঘেরে চাষ করছেন।প্রতি বছরের শেষের দিকে অর্থাৎ নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে মাছ ধরেন এবং স্থানীয় বাজারে তা বিক্রি করেন ।আবু তাহের আরো বলেন এই দুটি প্রজেক্ট থেকে মাছ বিক্রি করে প্রতি বছর২৫লক্ষ থেকে ৩০লক্ষ টাকা আয় করেন।
আবু তাহের বলেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা দপ্তর কুমিল্লা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার দপ্তর দাউদকান্দি থেকে বিভিন্ন সময় মৎস্য চাষের উপর প্রশিক্ষন প্রহন করেন ।মাছের সম্পুরক খাদ্যের পাশাপাশি প্রাকৃতিক খাদ্য বৃদ্ধির জন্য শতাংশ প্রতি ১৫০গ্রাম ইউরিয়া ও ৭৫গ্রাম করে টিএসপি সার ব্যবহার করেন। তিনি আরও বলেন শীতের শুরুতে মাছ যাতে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত না হয় এজন্য প্রতিশতাংশে ৫০০গ্রাম চুন ও ৫০০গ্রাম লবন প্রয়োগ করে থাকেন।
তার খামারে ক্ষতিগ্রস্থ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন করোনাকালীন সময় তিনি মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হন ।বিশেষ করে করোনাকালীন সময় লোকের সংকট ও মাছের খাদ্য ক্রয় ও পরিবহন সঠিক ভাবে করতে না পারায় এতে মাছের আশানোরুপ উৎপাদন ব্যহত হয় যার ফতে তিনি হিমালয় পজেক্টে থেকে প্রায় ১.৫ কোটি টাকা ও সুগন্ধা প্রজেক্ট থেকে প্রায় ১কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্থ হন এর ফলে তিনি মাছ চাষে আগ্রহ না হাড়িয়ে সফলতা অর্জন করেনে।
মৎস্য খামারী আবু তাহের বলেন মাছ চাষ করে অধিক লাভবান হয়েছি। মাছ চাষ করে সংসার চালিয়ে বেশ ভালোই চলছে। বেকার যুবকদের চাকুরির পিছনে না ঘুরে মৎস্য চাষে প্রশিক্ষন নিয়ে মাছ চাষ করে ভাগ্যের চাকা বদলে দেয়া সম্ভব হবে। পুকুর না থাকলেও লিজ নিয়ে চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া অতীব সহজ
সফল মৎস্য চাষী আবু তাহেরের মৎস্য চাষে সফলতা দেখে আরো বেকার যুবকরামাছ চাষে এগিয়ে আসবেন বলেও তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রতিবেদনকারীঃ
মোঃআল আমিন
কৃষি তথ্য কেন্দ্র সংগঠক,
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তর,কুমিল্লা।