পুকুরে পাবদা মাছের মিশ্র চাষ পদ্ধতি মৎস্য চাষিরা অনেকেই জানেন না। দেশের প্রাকৃতিক উৎসগুলোতে এখন আর তেমন মাছের দেখা পাওয়া যায় না। তাই অনেকেই বিকল্প হিসেবে পুকুরে মাছের চাষ করে থাকেন। অধিক লাভের আশায় কেউ কেউ পুকুরে মিশ্র মাছ চাষ করে থাকেন। আজকের এ লেখায় আমরা জেনে নিব পুকুরে পাবদা মাছের মিশ্র চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে-
পুকুরে পাবদা মাছের মিশ্র চাষ পদ্ধতিঃ
পুকুর প্রস্তুতিঃ
সারা বছর পানি থাকে অর্থাৎ অন্য মাছের চাষ হচ্ছে এমন পুকুরে পাবদা মাছ চাষ করা আরো ভালো। নতুন পুকুরের পাড় মেরামত ও জলজ আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। পুকুরে প্রতি শতাংশে ১ কেজি হারে চুন প্রয়োগ করতে হবে। চুন প্রয়োগের ২ থেকে ৩ দিন পর প্রতি শতাংশে ৫ কেজি হারে গোবর প্রয়োগ করতে হবে। এতে পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য জন্মাবে। পুকুর থেকে রাক্ষুসে ও অবাঞ্ছিত মাছ থাকলে তা দূর করতে হবে।
পোনা মজুদের হারঃ
পুকুরের পানি ৪ থেকে ৫ ফুট গড় উচ্চতা ও হালকা সবুজাভ হলে পোনা মজুদ করতে হবে। মিশ্র চাষের ক্ষেত্রে প্রতি শতাংশে ২ থেকে ৩ ইঞ্চি সাইজের ৫০টি পাবদা, ১০০টি শিং এবং ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি সাইজের ৫টি কাতলা, ১০টি রুই , ১০টি মৃগেল, ২টি সিলবার কার্প ও ২টি গ্রাস কার্পের সুস্থ পোনা মজুদ করতে হবে।
খাদ্য প্রয়োগঃ
নিয়মিত সম্পূরক খাদ্য মাছের দেহ ওজনের শতকরা ৩ থেকে ৮ ভাগ হারে প্রয়োগ করতে হবে। অনুর্বর পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্যের প্রাচুর্যতা বৃদ্ধির জন্য ১৫ দিন পর পর প্রতি শতাংশে ২ থেকে ৫ কেজি পচা গোবর প্রয়োগ করতে হবে। পানির রং গাড় সবুজ হয়ে গেলে অবশ্যই গোবর প্রয়োগ বন্ধ করতে হবে এবং পানির পি,এইচ পরীক্ষা করতে হবে। উল্ল্যেখ্য যে, পাবদা মাছ পুকুরের তুলনা মূলক ছোট মাছ খেয়ে ফেলবে তাই চাষের অন্যান্য মাছ যাতে পাবদার চাইতে বড় সাইজের হয় সে দিকে নজর রাখতে হবে।
চাষ ব্যবস্থাপনাঃ
অপেক্ষাকৃত ভালো উৎপাদন পাওয়ার লক্ষ্যে নিয়মিতভাবে খাদ্য সরবরাহ করতে হবে ও প্রতি সপ্তাহে একবার হররা টানতে হবে। পুকুরের পানি কমে গেলে পানি সরবরাহ করতে হবে।
মাছ আহরণঃ
পাবদা মাছ ৬০ থেকে ৭০ গ্রাম ওজনের হলে বিক্রির জন্য আহরণ করা যেতে পারে। পোনা মজুদের ৭ থেকে ৮ মাস পর সব মাছ আহরণ করার ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে তবে ১ বছরের অধিক সময় পর আহরণ করলে মাছের ওজন দ্বিগুনের চাইতেও বেশি হতে দেখা গেছে।
সূত্র: আধুনিক কৃষি খামার