সোনালি মুরগি পালন ব্যবস্থায় খামারিদের করণীয় যে কাজগুলো রয়েছে সেগুলো ভালোভাবে জেনে রাখতে হবে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পোলট্রি তথা মুরগির খামার গড়ে উঠেছে। মুরগি পালনের সঠিক পদ্ধতি না জানার কারণে অনেকেই লোকসান করে থাকেন। আসুন আজকে জানবো সোনালি মুরগি পালন ব্যবস্থায় খামারিদের করণীয় সম্পর্কে-
সোনালি মুরগি পালন ব্যবস্থায় খামারিদের করণীয়ঃ
খামারের জায়গা ব্যবস্থাপনাঃ
সাধারণত ৬০ দিনের হিসেব মাথায় রেখেই সোনালি পালন করে থাকেন। অনেক সময় ওজন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় না আসায় অথবা বাজার দর কম থাকার কারণে অনেক সময় ৬০ দিনের বেশিও মুরগি ফার্মে রাখতে হয়।
সাধারণ ০.৮৫০ থেকে ০.৯৫০ স্কয়ার ফুট প্রতি মুরগি হিসেবে জায়গা প্রদান করতে হয়। এছাড়াও ঘরের ভিতরে খুঁটির সাথে বাঁশ বেঁধে দিলে হিসেবের তুলনায় ২০০ থেকে ৩০০ মুরগি অথবা ঘরের জায়গা অনুযায়ী আরও কিছু মুরগি বেশি পালন করা যেতে পারে।
সাধারণত সবাই জায়গার তুলনায় ফার্মে অত্যধিক বেশি মুরগি তুলে থাকেন। বিশেষ ভাবে মনে রাখবেন, ঘরে জায়গার তুনায় বেশি মুরগি পালন করতে গেলে ভাইরাস জনিত রোগসমূহে মুরগির মৃত্যুহার অনেক বেশি হয়। বিশেষ করে রাণীক্ষেত এবং গামবোরো রোগে অত্যধিক মুরগির ঘনত্বেরর কারণেই মৃত্যুহার অনেক বেশি হয়।
সোনালি মুরগির ক্ষেত্রে ঘরের জায়গার তুলনায় মুরগি বেশি হলেই ঠোকরা-ঠুকরির পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। সুতরাং ঘরের জায়গার তুলনায় হিসেবের থেকেও সবসময় মুরগি কম তুলা বেশি ভাল। তবে শীতকালে একটু বেশি বাচ্চা তোলা যেতে পারে।
মুরগির ব্রুডিং ব্যবস্থাপনাঃ
ব্রূডারের সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিস যেমন লিটার পেপার, চিকগার্ড, পানি, হোভার, খাবারের পাত্র সব তিন ঘন্টা আগেই বসিয়ে নিতে হবে যথাযথ জায়গায়।
হোভারের লাইট দুই-তিন ঘন্টা আগেই জ্বালিয়ে নিন এবং একঘন্টা পর থার্মোমিটারের রিডিং পরীক্ষা করতে হবে।
বাচ্চা আসার আধঘন্টা আগে পানিতে দ্রবণীয় কোন প্রোবায়েটিক দিয়ে ব্রুডারের চারপাশে এবং ভিতরে পেপারে হালকা স্প্রে করতে পারেন।
বাচ্চা আসার ১০ মিনিট আগেই পানির পাত্র এবং খাবার পাত্র যথাযথ জায়গায় বসিয়ে দিতে হবে।
বাচ্চা আসার পর বাচ্চার বক্স সহ কিছুক্ষণ শেডের মধ্যে রেখে দিন আনুমানিক ১০ মিনিট
তারপর বাচ্চাসহ প্রতিটি বক্সের ওজন করুন এবং খাতায় লিপিবদ্ধ করুন বক্স নম্বর সহ পরবর্তীতে খালি বক্সের ওজন বাদ দিলে আপনি একদিনের বাচ্চার ওজন পাবেন।
এর পর প্রতিটি ব্রূডারে বাচ্চা ছেড়ে দিন এবং বাচ্চার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করুন (যদি ভ্যাকসিনেশন করাতে চান তা হলে একে একে চোখের ফোটায় ভ্যাকসিন দিন)
যদি বাচ্চা দুর্বল থাকে তা হলে পৃথক করুন, এবং গ্লূকোজের পানি ফোটায় ফোটায় খাইয়ে দিন।
মুরগির খাদ্য ব্যবস্থাপনাঃ
সারাদিনে খাদ্য দেয়ার নিয়ম-
দিনে ৩ বার খাবার দিতে হবে। বিশেষ করে মনে রাখতে হবে-
সকালে সর্বোচ্চ ৪ ঘন্টার মধ্যে খাদ্য খাওয়া শেষ হয়ে যায়।
দুপুরে যেন সর্বোচ্চ ৩ ঘণ্টার মধ্যে খাদ্য শেষ হয়।
রাতে সর্বোচ্চ ৫ ঘণ্টা যেন খাদ্য খায়।
প্রয়োজনে মুরগির ক্রপ পরীক্ষা করে খাদ্য দিতে হবে। যদি খাদ্য থলি ভর্তি থাকে তবে খাদ্য দেয়া কোন দরকার নাই। কারণ মনে রাখবেন, সোনালি মুরগিকে আপনি যতই খেতে দিবেন তারা ততই খাবে। কিন্তু এতে খাদ্য অপচয় হবে।