মাছ ও চিংড়ি চাষে প্রোবায়োটিক এর ব্যবহার অত্যান্ত তাৎপর্যপূর্ণ। মাছ চাষে পানির গুণগত মান বজায় রাখতে প্রোবায়োটিকের ব্যবহার হয়ে থাকে। মাছ ও চিংড়ি চাষে প্রোবায়োটিক ব্যবহার কেন করতে হবে এবং এর উপকারি দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা থাকছে আজকের লেখায়।
মাছের প্রোবায়োটিকস
লেখার শুরুতে নতুন মাছ ও চিংড়ি চাষে প্রোবায়োটিক এর ব্যবহার সম্পর্কে একটু ধারণা দিতে চাই। এই প্রোবায়োটিক এর ব্যবহার মানুষ সহ সকল পশু-পাখিতে হয়ে থাকে।
প্রোবায়োটিক
প্রোবায়োটিক হলো একপ্রকার অনুজীব বা উপকারি ব্যাকটেরিয়া যা প্রাণি ও পরিবেশের জন্য ভালো। তারাতো ক্ষতি করেই না বরং ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে। এই উপকারি অনুজিবের অনেক ধরন ও নাম থাকতে পারে। আমরা যে দই খাই সেটি আসলে এক প্রকার উপকারি ব্যকটেরিয়া। এদেরকে Beneficial Bacteria
প্রিবায়োটিক
এবার আসুন প্রিবায়োটিক, প্রিবায়োটিক হলো এমন কিছু উপাদান যা প্রোবায়টিক বা উপকারি ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি করে। প্রিবায়োটিককে প্রোবায়েটিক খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে। আর তাই প্রোবায়োটিক ও প্রিবায়োটিক একসাথে প্রয়োগ করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
মাছ চাষে প্রোবায়োটিক ব্যবহার
পুকুর ,জলাসয়, খাল-বিল, হায়ড়-বায়ড়, বায়োফ্লকের ট্যাংক সকল প্রকার মাছ চাষের পানির গুণগত মান উন্নত করতে পানিতে প্রোবায়োটিক ও প্রিবায়োটিক ব্যবহার করা উত্তম। পানিতে প্রোবায়োটিক ব্যবহার করলে পানির ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয় এবং পনিতে প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরি হবার পরিবেশ তৈরি হয়। এর ফলে অধীক ঘনত্বে মাছ চাষ করা যায়।
ব্যবহারের নিয়ম
প্রতি ৫০ গ্রাম প্রোবায়োটিক, পুকুরের ১০ লিটার পানি এবং ১০০ গ্রাম চিনি/চিটাগুড় ভালোভাবে মিশিয়ে ৩০ মিনিটের জন্য ছায়াযুক্ত স্থানে রেখে দিন। এর পর সর্বত্র সমান ভাবে ছিটিয়ে দিন। প্লাংটন ব্লুম নিয়ন্ত্রেনে উল্যেখিত মাত্রায় সন্ধার পরে প্রয়োগ করুন।
মাছ চাষে প্রোবায়োটিক ব্যবহারে যা খেয়াল রাখতে হবে
- মাছ চাষে প্রোবায়োটিক ব্যবহারের আগে কমপক্ষে ৩ থেকে ৭ দিনের ব্যবধানে জীবানুনাশক, চুন, লবন কিংবা জীবাণুনাশক ব্যবহার করতে হবে।
- এর পরে আর কোনভাবেই জীবাণু নাশক ব্যবহার করা যাবে না।
- যদি সম্ভব হয় তাহলে আগেই প্রোবায়োটিক ব্যবহার করতে হবে।
- দিনের বেলা এক্টিভেট করলে অবশ্যই ছায়াযুক্ত বা অন্ধকার জায়গায় ঢেকে রাখতে হবে।
- মাছের রোগাক্রান্ত অবস্থায় ব্যবহার না করাই সবচেয়ে ভালো। এতে সংক্রমণ তরান্বিত হতে পারে।
- পানির তাপমাত্রা ২৫° থেকে ৩৫° এর মধ্যে আছে কি না দেখা উচিত। ২০° এর নীচে এবং ৪০° এর উপরে তাপমাত্রা থাকলে প্রোবায়োটিক ব্যবহার না করাই সবচেয়ে ভালো।