সঞ্চয়ের টাকায় হাঁস-মুরগি ও গরু-ছাগল পালনে স্বাবলম্বী ফারিদা বেগম। তিনি এলজিইডি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে খামার করেন। নিজ খামারের হাঁস-মুরগি ও গরু-ছাগল বিক্রি করে কিনেছেন আবাদি জমি। সেখানে চাষাবাদ করে হয়ে ওঠেন স্বাবলম্বী ও আত্মনির্ভরশীল। এখন আর তার কোনো অভাব নেই। তার স্বাবলম্বী হয়ে উঠাতে অনেকে অনুপ্রাণীত হয়ে তারাও খামার করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।
জানা যায়, নারী উদ্যোক্তা ফরিদা বেগম গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার বাজে ফুলছড়ি গ্রামের বাসিন্দা। চরে অবস্থিত গ্রামটি বর্ষার সময় পানিতে থই থই করে আর শুকনো সময় হয়ে উঠে বালুর রাজ্য। নদী ভাঙন ও বিভিন্ন দূর্যোগের সাথে মোকাবেলা করে তার এই পথ চলা। তার সংসার ভেঙে যাওয়ার ৩ সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন। অভাবের সাথে যুদ্ধ করে জীবন কাটাতেন। তারপর এলজিইডি প্রতিষ্ঠানে কর্মী হিসেবে নিয়োগ পান। সেখানে কাজ করে মুজুরীর টাকা জমিয়ে বাড়িতে হাঁস-মুরগি ও গাভি পালন শুরু করেন। তারপর আর তাকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে তিনি স্বাবলম্বী হয়েছেন।
নারী উদ্যোক্তা ফরিদা বলেন, আমার অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে যায়। তিন সন্তান জন্ম হওয়ার পর স্বামী ছেড়ে চলে যায়। তারপর কি করবো কিছু ভেবে পাইনি। কাজের অনেক খোজাখোজি করেছি। অনেক কষ্টে দিন কাটিয়েছি। তারপর এলজিইডি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্পে চুক্তিভিত্তিক কাজে শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ পাই।
তিনি আরো বলেন, শ্রমিকের কাজ করে মুজুরীর টাকা জমিয়ে হাঁস-মুরগি, গরু ও ছাগল পালন শুরু করি। এখন এই খামার থেকে আয় করে আবাদি জমি কিনেছি। এখন সেখানেও চাষাবাদ করছি।
ফরিদা আরও বলেন, আমি নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও আশে পাশের অন্যান্য নারী যারা অবহেলিত তাদের কাজের সুযোগ ও স্বাবলম্বী হওয়ার পরামর্শ দেই।
এলসিএস মনিটরিং জীবিকা কর্মকর্তা খন্দকার জাকির হোসেন বলেন, আমাদের প্রভাতী প্রকল্পে কাজ করা ফরিদা এখন স্বাবলম্বী হয়েছেন। তার কঠোর পরিশ্রম ও একনিষ্ঠতা তাকে সফল ও স্বাবলম্বী করে তুলেছে। আমরা তার মতো অন্যান্য আরো নারীদের দক্ষতা অর্জনে কাজ করে যাচ্ছি।
গাইবান্ধা জেলা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলাম বলেন, আমরা প্রভাতী প্রকল্পের মাধ্যমের দুস্থ অনেক নারীর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছি। পাশাপাশি তাদের স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে উঠাতে আমরা আপ্রাণ চেষ্ট করে যাচ্ছি।