দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে গাড়ল (উন্নত জাতের ভেড়া) পালনে আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় খামারিদের। গাড়ল পালনে খরচ কম ও লাভ বেশি হওয়ায় এবং এর চাহিদা দিন দিন বাড়ায় এটি পালনে আগ্রহ বেড়েই চলেছে। অনেকে সফলতা অর্জন করেছেন। গাড়ল (ভেড়া) পালন করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন এলাকার অনেক বেকার যুবক।
একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী উপজেলার তর্পনঘাট গ্রামের বাসিন্দা মৃত আবদুল শেখের ছেলে মো. রইচ উদ্দিনের স্বল্প বেতনে ঠিকমতো সংসার চলত না। সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকত। তিনি প্রায় পাঁচ বছর আগে মেহেরপুর জেলায় তার আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে গাড়ল পালন দেখে উদ্বুদ্ধ হন। সেখান থেকে তিনি দুটি মা গাড়ল ৩৬ হাজার টাকা দিয়ে কিনে বাড়িতে এনে পালন করতে শুরু করেন। এখন তার খামারে সব সময় শতাধিক গাড়ল পালন করা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা থেকে খামারিরা এসে তার কাছ থেকে গাড়ল কিনে নিয়ে যান। তার খামারের গাড়লের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় তার নিজ খামারে উৎপাদিত গাড়ল ছাড়াও তিনি মেহেরপুর থেকে গাড়ল কিনে এনে খামারিদের কাছে বিক্রি করে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন করছেন। এখন তিনি মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করছেন। ভালো আয়-রোজগার হওয়ায় এখন তার সংসারে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে, এখন তিনি স্বাবলম্বী। গাড়ল পালনে তার ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেছে।
রইচ উদ্দিন জানান, গাড়লের মাংস গন্ধমুক্ত সুস্বাদু। পুষ্টিগুণেও ভালো। দেশের দক্ষিণ বঙ্গে এর মাংসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতি কেজি মাংস সাত-আটশ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। একজন খামারি দুই লাখ টাকা বিনিয়োগ করে খরচ বাদে গাড়ল খামার থেকে প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। গাড়ল পালনে তেমন কোনো ঝামেলা নেই। মাঠে ছেড়ে দিয়ে প্রাকৃতিক খাবার, যেমন মাঠের ঘাস ও লতাপাতা খাওয়ানোর মধ্য দিয়ে পালন করা যায়। রোগবালাই খুবই কম। ফলে গাড়ল পালনে খরচও খুব কম। একটি গাড়ল বছরে দুবার একটি থেকে তিনটি বাচ্চা দেয়। তিনি বেকার যুবকদের চাকরির পেছনে না ছুটে গাড়ল পালন করে স্বাবলম্বী হওয়ায় আহ্বান জানান।
গাড়ল পালন এই উপজেলায় নতুন হলেও বর্তমানে রইচ উদ্দিনের মতো এলাকার অনেকেই গাড়ল পালন শুরু করেছেন। লাভজনক হওয়ায় দিন দিন খামারিরা গাড়ল পালনে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নাসিরুল ইসলাম জানান, উপজেলায় মোট ১২ খামারি গাড়ল পালন শুরু করেছেন। তুলনামূলকভাবে গৃহপালিত অন্য প্রাণীর চেয়ে গাড়লের রোগবালাই কম হয় এবং দ্রুত মাংস বৃদ্ধি হয়। গাড়ল পালন লাভজনক হওয়ায় গাড়ল পালনে অনেকে আগ্রহ দেখাচ্ছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে গাড়লের চিকিৎসাসেবা, পরামর্শসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে খামারিদের।
sent by MD.Arafath Hossain(Barishal)