ভূমিকা:মাছ ও চিংড়ি চাষ একটি লাভজনক চাষ ব্যবস্থাপনা। প্রাণিজ আমিষের ঘাটতি পূরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রপ্তানি আয় বৃদ্ধিসহ দেশের উৎপাদন ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য কার্পজাতীয় মাছ ও গলদা চিংড়ির মিশ্রচাষ কার্যক্রম গ্রহণ করা অত্যাবশ্যক। দেশব্যাপী উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে এই সেক্টরে উৎপাদন বৃদ্ধির পদক্ষেপ গ্রহণের এখনই উপযুক্ত সময়।কার্পজাতীয় মাছ মাছ চাষের সাথে গলদা চিংড়ি চাষের সম্ভাবনা অত্যন্ত উজ্জ্বল। কার্প-গলদা চাষের ক্ষেত্রে কোন কোন এলাকায় গলদা প্রধান ফসল আবার কোন এলাকায় কার্পজাতীয় মাছ প্রধান ফসল হিসেবে চাষ করা হয়। বাংলাদেশের ভৌগলিক এবং আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে কার্প-গলদা মিশ্র চাষে প্রধান হিসেবে গলদা নির্বাচন বেশি লাভজনক।
স্থান নির্বাচন
■ খামারের অবস্থান বন্যা ও দূষণমুক্ত হওয়া প্রয়োজন।
■ পুকুরে পানির সহজ প্রাপ্যতা এবং গড় গভীরতা ৩-৫ ফুট হওয়া বাঞ্ছনীয়।
■ দৈনিক ৬-৮ ঘণ্টা সূর্যালোকের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
■ পুকুরের পাড় আগাছা ও ছায়া সৃষ্টিকারী গাছপালা মুক্ত হতে হবে।
■ উন্নত যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
■ মাছের পোনা ও পিএল এর সহজ প্রাপ্যতা।
■ বাজারজাত করণের সুবিধা।
ঘের/পুকুরের জৈব নিরাপত্তা
মানুষ, গরু, ছাগল, কুকুর, বিড়াল, খরগোস, হাস-মুরগী, ইঁদুর, সাপ, ব্যাঙ, উদ ইত্যাদি যাতে প্রবেশ করতে না পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে।
ঘের/পুকুরের পাড় এবং জলাশয়ের মধ্যে মল মূত্র ত্যাগ করা যাবে না।
● কোন ধরনের আগাছানাশক ও কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না।
■ মরা জীবজন্তু পুকুর বা ঘেরে খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।
■ শামুক/ঝিনুকের কাঁচা মাংস ব্যবহার করা যাবে না।
পুকুর/ঘের প্রস্তুতকরণ
পুকুর/ঘেরের পাড় ভাঙ্গা থাকলে মেরামত করতে হবে। পুকুরের তলদেশের ৪-৫ ইঞ্চি কাদা রেখে অতিরিক্ত পচা ও কালো কাদা তুলে ফেলতে হবে। পচা ও কালো কাদা অপসারণ করা না হলে:
● তলায় বিষাক্ত গ্যাস জমা হয়।
■ মাছ ও চিংড়ির জন্য অক্সিজেন স্বল্পতা দেখা দিবে।
■ রোগে আক্রান্ত হয়ে মাছ ও চিংড়ির মড়ক দেখা দেয়।
পুকুর পাড়ে জাল দ্বারা বেষ্টনী নির্মাণ করতে হবে; কারণ বৃষ্টির সময়, অমাবশ্যা ও পূর্ণিমায় গলদা চিংড়ি জলাশয়ের কিনারায় উঠে আসার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও বাইরে থেকে ক্ষতিকর ও রাক্ষুসে প্রানী যেমন সাপ, ব্যাঙ, গুই সাপ, ইত্যাদি চাষ এলাকায় প্রবেশ করে চিংড়ি/মাছ খেয়ে ফেলে ও রোগের বিস্তার ঘটাতে পারে।
রাক্ষুসে ও অনাকাঙ্ক্ষিত মাছ দমন পদ্ধতি
পুকুর শুকিয়ে, রাক্ষুসে ও অনাকাঙ্ক্ষিত মাছ দূর করা যায়।
রাসায়নিক দ্রব্য প্রয়োগ
রাসায়নিক দ্রব্যের নাম শক্তি ব্যবহার মাত্রা/শতাংশ
রোটেনন ৯.১০ ১৮-২০ গ্রাম
৭.০০ ৩০-৩৫ গ্রাম
অথবা, ব্লিচিং পাউডার ৭৫০ গ্রাম
উল্লেখ্য, রৌদ্রজ্জ্বল দিনে রোটেনন প্রয়োগে সর্বোচ্চ ফল পাওয়া যায়।
চুন প্রয়োগ |
চুন প্রয়োগের মাত্রা মাটির পিএইচ ও চুনের ধরনের ওপর নির্ভর করেই কেবল মাত্র চুনের মাত্রা নির্ধারণ করা উচিত।
মাটির ধরন নতুন পুকুর/ঘের পুরাতন পুকুর/ঘের
দো-আঁশ ১ কেজি/শতাংশ ২ কেজি
এটেল ৪ কেজি/শতাংশ ৩ কেজি
প্রস্তুতকালীন সার প্রয়োগ
● চুন প্রয়োগের ৭ দিন পর শতাংশ প্রতি খৈল ০.৩০-০.৫০ কেজি, ইউরিয়া ১০০-১৫০ গ্রাম এবং টিএসপি ৫০-৭৫ গ্রাম হারে প্রয়োগ করতে হবে।
ইউরিয়া সার ছিটিয়ে এবং টিএসপি ও সরিষার খৈল ১২ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে পানিতে গুলে সমস্ত পুকুরে সমানভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে।
■ সার প্রয়োগের ৫-৬ দিন পর পুকুরের পানিতে প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরি হলে পুকুরে পোনা ছাড়তে হবে।
চিংড়ির আশ্রয়স্থল স্থাপন
■ খোলস বদলের সময় চিংড়ি দুর্বল থাকে। তখন এদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থলের প্রয়োজন।
■ ঘের/পুকুরের তলায় কিছু জলজ উদ্ভিদ থাকলে তা চিংড়ির আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে।
■ এছাড়া তাল বা নারিকেলের শুকনা পাতা, বাঁশের কঞ্চি, ভাঙ্গা প্লাস্টিকের পাইপ, ভাঙ্গা কলসের টুকরা, গাছের ডাল (হিজলের ডাল উত্তম), জাল ব্যবহার করে চিংড়ির আশ্রয়স্থল তৈরি করে দেয়া যায়।
মাছ ও চিংড়ির মজুদ ঘনত্ব
■ ভাল উৎপাদন পাওয়ার জন্য সুস্থ ও সবল পোনা নির্দিষ্ট হারে মজুদ করা উচিত।
■ গলদা চিংড়ি নীচের স্তরে বসবাস করায় মৃগেল, কালিবাউস, কার্পিও এবং বাটা জাতীয় মাছ মজুদ না করা উত্তম।
■ পোনার মজুদ মার্চ থেকে জুন মাসের মধ্যে সম্পন্ন করাই উত্তম।
বড় আকারের পোনা/জুভেনাইল ছাড়াই বেশি লাভজনক।
ছক-১ (গলদা প্রধান চাষ)
প্রজাতির নাম পোনা/যুভেনাইল এর আকার মজুদ ঘনত্ব/শতাংশ নমুনা – ১ মজুদ ঘনত্ব/শতাংশ নমুনা – ২
কাতলা ১২-১৫ সে.মি. ১-২ ১-২
সিলভার কার্প ১২-১৫ সে.মি. ২-৩ ৩-৫
রুই ১২-১৫ সে.মি. ১-৩ ২-৩
গ্রাসকার্প ১২-১৫ সে.মি. ১-২ ১-২
জুভেনাইল ৫-৭সে.মি. ৫০-৬০ ৬০-৭০
সর্বমোট ৫৫-৭০ ৬৭-৮২
স্ত্রী গলদার চেয়ে পুরুষ গলদা বৃদ্ধি বেশি হওয়ায় পুরুষ গলদা মজুদ লাভজনক।
পুকুর/ঘেরে পোনা মজুদ ঘনত্ব বেশি হলে মাছ ও চিংড়ির বৃদ্ধি কম হয়। ফলে লাভ কম হয় । মজুদ ঘনত্ব কম হলে মাছ ও চিংড়ির বৃদ্ধি বেশি হয়। ফলে লাভ বেশি হয় ।
ছক-২ (কার্প প্রধান চাষ)
প্রজাতির নাম পোনা/যুভেনাইল এর আকার মজুদ ঘনত্ব/শতাংশ
কাতলা ১২-১৫ সে.মি. ৫
সিলভার কার্প ১২-১৫ সে.মি. ১৫
রুই ১২-১৫ সে.মি. ১০
গ্রাসকার্প ১২-১৫ সে.মি. ০১
মৃগেল ১২-১৫ সে.মি. ০৮
কমন কার্প ১২-১৫ সে.মি. ০১
গলদা জুভেনাইল ৫-৭সে.মি. ১৫
সর্বমোট ৫৫
বাংলাদেশের স্বাদু পানির সব পুকুর/ঘেরে কার্পজাতীয় মাছের সাথে শতাংশ প্রতি ১০-১৫ টি গলদা জুভেনাইল মজুদ করা যায়।
পোনা/পি. এল শোধন ও অভ্যস্তকরণ
পোনা/পিএল ছাড়ার আগে জীবাণুমুক্ত করে নেওয়া ভাল।
■ একটি বালতিতে ১০ লিটার পানি নিয়ে ই-১ চা চামচ পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট বা ২০০ গ্রাম খাবার লবণ মিশিয়ে পোনা/পিএল ৩০ সেকেন্ড ডুবিয়ে পুকুর বা ঘেরে ছাড়তে হবে।
■ অভ্যস্তকরণের জন্য পরিবহন পাত্র ১৫-২০ মিনিট পানিতে ভাসিয়ে রাখতে হবে।
■ ব্যাগ বা পাত্রের মুখ খোলার পর ধীরে ধীরে পাত্র ও জলাশয়ের পানি অদল বদল করে দুই পানির তাপমাত্রা সমতায় আনতে হবে।
সার ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা
মাছ ও চিংড়ির প্রাকৃতিক খাদ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য তথা মাছের ভাল বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত সার প্রয়োগ করা প্রয়োজন। এই প্রয়োগ দৈনিক বা সাপ্তাহিক মাত্রায় হতে পারে।
সারের ধরন দৈনিক/শতাংশ সাপ্তাহিক/শতাংশ
খৈল ২০-৩০ গ্রাম ১৫০-২০০ গ্রাম
ইউরিয়া ৪-৫ গ্রাম ২০-২৫ গ্রাম
টিএসপি ২-৩ গ্রাম ১০-১৫ গ্রাম
পুকুরের পানি যদি অত্যধিক সবুজ রং ধারণ করে তাহলে সার প্রয়োগ বন্ধ করতে হবে।
চুন ও জিওলাইট প্রয়োগ
■ পানির পিএইচ এর ওপর ভিত্তি করে পুকুরে প্রতি মাসে কমপক্ষে একবার চুন ও জিওলাইট প্রয়োগ করা উচিত।
■ শতাংশ প্রতি ২০০-২৫০ গ্রাম চুন ও জিওলাইট শতাংশ প্রতি ১০০-১৫০ গ্রাম প্রয়োগ করতে হবে।
মাছ ও চিংড়ির পুষ্টি চাহিদা
পরীক্ষা করে দেখা গেছে উৎপাদন ঘেরে রুইজাতীয় মাছ ও চিংড়ির খাদ্যে আমিষের চাহিদা ২৫-৩০%। চাষির আর্থিক সামর্থ্য ও মাছ চিংড়ির পুষ্টি চাহিদা বিবেচনা করে কার্প-চিংড়ি মিশ্র চাষের ঘেরে প্রয়োগের জন্য খাদ্য তৈরিতে উপকরণ ব্যবহারের নমুনা উল্লেখ করা হলো
উপাদানের নাম নমুনা-১ নমুনা-২
ব্যবহার মাত্রা % গ্রাম/কেজি খাদ্য ব্যবহার মাত্রা % গ্রাম/কেজি খাদ্য
ফিসমিল ৩০ ৩০০ ৩০ ৩০
সরিষার খৈল ২০ ২০০ ২০ ২০০
সরিষার খৈল ২০ ২০০ ২০ ২০০
সয়াবিন খৈ ২০ ২০০ ১০ ১০০
হাড়/ঝিনুকের গুড়া – – ৫ ৫০
পালিসকুড়া/গমে ২০ ২০০ ২০ ২০০
আটা ১০ ১০০ ১০ ১০০
চিটাগুড় – – ৫ ৫০
খনিজ লবণ – ১ চা চামচ – ১ চা চামচ
ভিটামিন প্রিমিক্স – ১ চা চামচ – ১ চা চামচ
মোট ১০০ ১০০ ১০০ ১০০
মাছ দিনের বেলায় খাদ্য গ্রহণ করে। অপর দিকে গলদা চিংড়ি নিশাচর। দিনের আলোর চেয়ে এরা অন্ধকারে চলাচল ও খাদ্য গ্রহণ করতে পছন্দ করে।
■ সে জন্য কার্প-চিংড়ি মিশ্রচাষের ঘেরে প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় খাবার দুভাগে ভাগ করে এক ভাগ সকাল ৬ টায় এবং আরেক ভাগ সন্ধ্যা ৬ টার পরে প্রয়োগ করতে হয়।
এক্ষেত্রে প্রত্যেকবার প্রয়োগের সময় খাবারের ১/৩ ভাগ পুকুর/ঘেরের অপেক্ষাকৃত গভীর অংশে এবং বাকি ২/৩ ভাগ পুকুর/ঘেরের পাড়ের চারিপাশের অগভীর অংশে/ঘেরের তলায় সমান ভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে।
■ তৈরি খাবারের পরিবর্তে বাজারে প্রাপ্ত পিলেটেড রেডিফিড ব্যবহার করা যেতে পারে।
আহরণ ও পুনঃমজুদ
■ চিংড়ির গড় ওজন ৮০ গ্রাম এবং কার্পের গড় ওজন ৭০০-১০০০ গ্রাম হলে ধরে ফেলতে হবে।
■ এ ক্ষেত্রে বেড় বা ঝাঁকি জাল ব্যবহার করা যেতে পারে।
■ ধরে ফেলা চিংড়ি ও মাছের সমান সংখ্যক পোনা/জুভেনাইল পুনরায় মজুদ করতে হবে।
চিংড়ির রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা
আমাদের দেশে চাষির আর্থ-সামাজিক অবস্থা, উপকরণের সহজপ্রাপ্যতা ও চিকিৎসা পদ্ধতির জটিলতার কারণে চিংড়ির রোগ চিকিৎসা চাষিদের পক্ষে শুধু কষ্ট সাধ্য নয় অনেকটা অসম্ভবও বটে। সে কারণে মনে রাখা দরকার রোগের চিকিৎসার চেয়ে রোগ প্রতিরোধই অধিক শ্রেয়। চাষের শুরুতেই নীচের পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করলে চিংড়ির রোগ চিকিৎসার মত বিরক্তিকর বিষয় পরিহার করা যেতে পারে
পুকুরে পরিমিত সূর্যালোকের ব্যবস্থা করা।
■ কোন অবস্থাতেই অতিরিক্ত চারা পোনা বা জুভেনাইল মজুদ না করা।
■ বাইরের অবাঞ্ছিত প্রাণী ও পানি পুকুরে ঢুকতে না দেয়া।
■ তলায় অতিরিক্ত কাদা না রাখা।
■ পরিমিত সার ও খাদ্য সরবরাহ করা।
পুকুরে ঘন ঘন জাল না ফেলা।
■ পুকুরে খোলাত্ব সৃষ্টির উৎস বন্ধ করা।
খাদ্য উপাদান পরিমাণ(কেজি)
চালের কুড়া/গমের ভুশি ৪৯.৫০
সরিষার/তিলের খৈল ২০.০০
ফিশমিল/প্রোটিন কনসেনট্রেটি ২০.০০
আটা ৫.০০
চিটাগুড় ৫.০০
ভিটামিন ও খনিজ ০.৫০
মোট ১০০.০০
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় করণীয়-
* সংরক্ষিত পিলেট খাদ্য এক মাসের মধ্যে ব্যবহার করে ফেলা উচিৎ। তবে খাদ্যে এন্টি ফাংগাল এজেন্ট/এন্টি-অক্সিডেন্ট ব্যবহার করলে উপযুক্ত পরিবেশে তা ৩-৪ মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।
* পোনা মজুদের পর প্রতিদিন সকাল-বিকাল মাছের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে হবে। মেঘলা দিনে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে।
* পুকুরের পানি কমে গেলে ভাল উৎস হতে পানি সরবরাহ করতে হবে। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে পুকুরের পানি বেড়ে গিয়ে উপচে পড়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হলে পানি বের করে দিতে হবে।
* সেকি ডিস্কে পানির স্বচ্ছতা ৮ সেন্টিমিটারের নীচে নেমে গেলে খাবার দেয়া বন্ধ থাকবে।
* পানিতে অক্সিজেনের অভাবে মাছ পানির উপরের স্তরে উঠে খাবি খেতে থাকে। এই অবস্থায় পানিতে ঢেউ সৃষ্টি করে/প্যাডেল হুইল বা এ্যারেটর ব্যবহার করে বা অন্য কোন উপায়ে পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়াতে হবে।
*পুকুরের তলায় যাতে বিষাক্ত গ্যাস জমতে না পারে সেজন্য মাঝে মাঝে হররা টানতে হবে।
* জাল টেনে মাঝে মাঝে মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে।
* বিক্রির উপযোগী মাছ ধরে ফেলতে হবে যেন অপেক্ষাকৃত ছোট মাইগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পায়।
আহরণ
* ফেব্রুয়ারী-মার্চে মজুদ করে ডিসেম্বরের মধ্যেই সব মাছ ধরে ফেলতে হবে।
* বাজার চাহিদার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঠিক করা প্রয়োজন।
* ভোর বেলায় মাছ ধরতে হবে।
উৎপাদন-
বর্ণিত পদ্ধতিতে একর প্রতি মাছের উৎপাদন ৪-৫ টন পাওয়া সম্ভব।
সম্ভাব্য উৎপাদন ব্যয়, আয় ও মুনাফা (এলাকাভেদে ইজারা মূল্য ও উপকরণ মূল্যের পার্থক্যের জন্য ব্যয়, আয় ও মুনাফা কমবেশী হতে পারে) জলায়তন এক একর, সময়কালঃ ৮-৯ মাস
ব্যয়ের খাত ব্যয় (টাকা)
ইজারামূল্য, পুকুর প্রস্তুতি, রোটেনন, চুন, সার ইত্যাদি: সবগুলো ৬০,০০০.০০/-
পোনা: বিভিন্ন মডেলের গড়: সবগুলো (মডেল ভেদে তারতম্য হবে) ৫০,০০০.০০/-
খাবার: ৯০০০ কেজি X ৪০ টাকা(নিজস্ব খামারে উৎপাদিত) ৩,৬০,০০০.০০/-
অন্যান্য (শ্রমিক, জালটানা, ঔষধপত্র,বাজারজাতকরণ): সবগুলো ১,০০,০০০.০০/-
ব্যাংক ৩৯,৩৭৫.০০/-
মোট ব্যয় ৬,০৯,৩৭৫.০০/-
আয়: উৎপাদন ৪৫০০ কেজি x ২২৫ টাকা প্রতি কেজি হারে = ৳ ১০,১২,৫০০/-
ব্যয়: = ৬,০৯,৩৭৫.০০/-
মুনাফা = ১০,১২,৫০০-৬,০৯,৩৭৫ = ৳ ৪ ,০৩, ১২৫/-
উত্তম মৎস্যচাষ অনুশীলনের সাধারণ নিয়মাবলি সর্বক্ষেত্রে সঠিকভাবে মেনে একজন চাষি এ পরিমাণ মুনাফা অর্জন করতে পারবেন।
মৎস্য বাংলাদেশ