দেশের বাজারে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দামে ক্রেতাদের মাঝে অসন্তাষ এবং নানা ধরনের প্রশ্ন থাকলেও বিশ্ব বাজারে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দামের শীর্ষে থাকা ১০০টি দেশের মধ্যেও বাংলাদেশের নাম নেই। সারাবিশ্বের জীবনযাত্রার খরচ নিয়ে ইনডেক্স তৈরির প্রতিষ্ঠান নামবিও (NUMBEO) -এর তথ্য অনুযায়ী, ডিমের দামে বিশ্বে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে সুইজারল্যান্ড, যেখানে প্রতি ডজন ডিমের দাম ৬.২০ মার্কিন ডলার; ডজনপ্রতি ৫.২০ ও ৪.৪৯ মার্কিন ডলার মার্কিন ডলার দাম নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে আইসল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড; প্রতিডজন ডিমের দামে তালিকার সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান (০.৯০ ডলার); ভারত (০.৯৩ ডলার) এবং তিউনিসিয়া (১.১৭ ডলার)। অপরদিকে ডজনপ্রতি ১.১৮ মার্কিন ডলার বা ১২৬.৪৪ টাকা দাম নিয়ে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৪ তম (১ ডলার =১০৭.১৬ টাকা হিসেবে; খুচরা ও এলসি পর্যায়ে এই দাম ১১০-১১৫)!
অপরদিকে নামবিও তথ্যমতো, প্রতিকেজি ড্রেসড ব্রয়লার ২.৪০ ডলার বিক্রি করে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৬তম; তালিকার পরেই ১০৭তম অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান যেখানে প্রতিকেজির দাম দেখানো হয়েছে ১.৯৬ ডলার এবং প্রতিকেজি ২.৪৪ ডলারে বিক্রি করে তালিকার ১০৫তম অবস্থানে রয়েছে থাইল্যান্ড। ব্রয়লার মুরগির দামে বিশ্ব বাজারে শীর্ষে অবস্থানকারী দেশগুলোর মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় অবস্থান করছে সুইজারল্যান্ড (২৬ ডলার),আইসল্যান্ড (১৬.২৯ ডলার) এবং নরওয়ে (১২.৮৬ ডলার।
দক্ষিণ এশিয়ার তিনটি দেশ সর্বশেষ বাজার (৪ মার্চ, ২০২৩) বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রতিকেজি ড্রেসড ব্রয়লার পাকিস্তানে বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ রুপি (প্রায় ২৫০ টাকা), ভারতে ২৫০ রুপি (প্রায় ৩২৭ টাকা) এবং বাংলাদেশে ৩০৬ টাকায় (টিসিবি)। ট্রেডিং ইকোনোমিকস বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বর্তমানে প্রতিকেজি ড্রেসড ব্রয়লার মুরগির দাম প্রায় ৭৮১ টাকা।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের দেয়া তথ্যমতে, খামারি পর্যায়ে রং ও অঞ্চলভেদে দেশে বর্তমানে প্রতিডজন ডিম ১০৬ -১২৬ টাকা এবং প্রতিকেজি জীবন্ত ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০-২০৫ টাকা দামে। ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর তথ্যমতে, খুচরা পর্যায়ে প্রতি ডজন ডিম ১২৬-১৩২টাকা এবং প্রতিকেজি জীবন্ত ব্রয়লার মুরগির দাম ২১০-২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সূর্যোদয়ের দেশ জাপানের টোকিওতে ডিমের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে যাওয়ায় ভোক্তা ও ব্যবসায়ীরা অস্বস্তিতে পড়েছে বলে জানিয়েছে জাপানী সংবাদ মাধ্যমে এনএইচকে ওয়ার্ল্ড। সেখানে এক কেজি মাঝারি আকারের ডিমের পাইকারি মূল্য ৩৩৫ ইয়েন বা প্রায় ২.৫০ ডলারে পৌঁছেছে। দেশটির পোলট্রি ব্যবসায়ীরা এজন্য মুরগির খাদ্যের দাম বৃদ্ধি এবং জাপানে বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়াকে দুষছেন।
তবে ডিমের দামে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রে। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেডিং ইকোনোমিকস বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে প্রতি ডজন ডিমের দাম যেখানে ছিল ৫.২৯ ডলার; সেখানে বর্তমানে সেটি বিক্রি হচ্ছে ২.৪৭ ডলার। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ) এর বরাত দিয়ে রয়টার্স বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কিছুদিন আগেও ডিমের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছলেও বার্ড ফ্লুর প্রকোপ দেখা না দিলে চলতি বছর ডিমের দাম সেখানে নাটকীয়ভাবে কমে যাবে।
ডিম ও মুরগির দাম বৃদ্ধির দাম প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন (বিপিআইএ) এর সভাপতি খন্দকার মহসিন এগ্রিনিউজ২৪.কম কে বলেন, ডিমের দামে শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বেই এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। এমনকি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, যাদের ফিড তৈরির মূল উপকরণের প্রায় সবগুলোই নিজের দেশে উৎপন্ন হয়, সেখানেও ডিমের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, বিগত এক বছরে মুরগির খাবারের দাম প্রায় দ্বিগুণের কাছাকাছি চলে আসছে; ডলারের দাম ৮৪ টাকা থেকে বর্তমানে ১০৯-১১০ টাকায় পৌঁছে গেছে, যে ডিমের উৎপাদন খরচ ছিল ৮ থেকে সাড়ে ৮ টাকা ; ফিডের দাম বৃদ্ধির কারণে সেটির উৎপাদন খরচ পৌঁছেছে এখন প্রায় ১১ টাকায়। বর্তমাানে খামারি পর্যায়ে এলাকাভেদে ডিমের দাম ৯-১০ টাকা এবং ব্রয়লার মুরগি ১৯০-২০৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ফলে সাধারণ ভোক্তার কাছে ডিম ও মুরগির দাম বেশি মনে হলেও; প্রকৃত সত্য হচ্ছে খামারি বর্তমান দামেও আমাদের টিকে থাকা মুশকিল হয়ে পড়েছে।
‘২০২২ সনে করোন মহামারির সময়ে স্কুল, কলেজ, হোটেল, রেস্তোরা, বেকারী বন্ধ থাকার সময়ে ডিম ও মুরগি বাজারে একটা ব্যাপক ধ্বস নামে; বাজারের দামের সাথে উৎপাদন খরচ কুলাতে না পেরে বহু খামার তখন বন্ধ হয়ে যায়; সেই রেশ কাটতে না কাটতেই ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ বাঁধে। ফলে প্রত্যেকটা পোলট্রি উকরণের দাম অনেক বেড়ে যায়, সেই সাথে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে ডিম ও মুরগির উৎপাদন খরচ। ফলে আরেক দফা হুমকির মুখে পড়ে যায় দেশের খামারিরা এবং অনেকেই খামার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। আমাদের উৎপাদন খরচ যেমন অনেক বেড়েছে, সেই সাথে প্রতিনিয়ত কমছে খামারির সংখ্যা। অন্যদিকে কিছু ভুঁইফোর গবেষণা রিপোর্টের কারণে মারাত্মক বাজে প্রভাব পড়ছে পোলট্রি সেক্টরে। বর্তমান বাজারে যে দামে ডিম ও মুরগি বিক্রি হচ্ছে সেটি উৎপাদন খরচের চেয়েও কম মূল্য। আমরাও চাই কম দামে ডিম ও মুরগি সরবরাহ করতে কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতিতে পোলট্রির প্রয়োজনীয় উপকরণ এবং ফিডের দাম না কমলে সেটি কোনভাবেই সম্ভব হচ্ছে না’ -যোগ করেন খন্দকার মহসিন।
নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানার সেকান্দার এগ্রো ফার্মের স্বত্ত্বাধিকারী মো. সেকান্দার হোসেন। বিভিন্ন কোম্পানির ডিলার এবং নিজে একজন খামারি হিসেবে তিনি প্রায় ২৩ বছর ধরে পোলট্রি ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। তিনি জানান, বর্তমানে বন্দর থানার প্রায় ৮৫ ভাগ ব্রয়লার এবং ৯৯ ভাগ লেয়ার খামারি ঝড়ে পড়েছেন।
সেকান্দার হোসেন বলেন, বন্দর থানায় প্রতিমাসে প্রায় দুই লাখ পিস মুরগির চাহিদা বিপরীতে নিজে একাই প্রায় ৮০ হাজার মুরগি সরবরাহ করতেন জানিয়ে সেকান্দার হোসেন বলেন, এখন আর আমার ডিলার ব্যবসা নেই; আমার সাথে যে ৪/৫জন ছিলেন তারা কেউই এখন আর এ ব্যবসাতে নাই। এখানকার প্রায় ৮৫ ভাগ মুরগির বর্তমানে বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানির দখলে; বাকী ১৫ ভাগ ছোট খামারিদের মুরগি। বন্দর থানায় বর্তমানে মাত্র দুইজন লেয়ার খামারি রয়েছেন। প্রতিদিন আড়াই লাখ ডিমের বিপরীতে মাত্র আড়াই হাজার ডিম এখন তারা উৎপাদন করেন।
‘করোনা মহামারির পর থেকে বিগত প্রায় তিন বছর লোকসান দিতে দিতে বন্দর থানার খামারি ও ডিলারের প্রায় সবাই ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। দেড় মাস ধরে ডিম ও মুরগির দাম বাড়াতে আমরা এখন লাভের মুখ দেখছি। কিন্তু খাবার ও বাচ্চার দাম আরো বেড়ে গেলে সেটিও সম্ভব হবে না -যোগ করেন খন্দর হোসেন।
বর্তমানে ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ও লাভের প্রসঙ্গ টানতে এগ্রিনিউজ২৪.কম কে তিনি বলেন, প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদনে বর্তমানে আমাদের প্রায় ১৬০ টাকার মতো খরচ হচ্ছে; এর বিপরীতে আমরা বিক্রি করছি ২০০-২০৫ টাকা। তবে, বড় কোন রোগ বালাই বা মুরগির মৃত্যুহার বেশি থাকলে উৎপাদন খরচ আরো বেশি হয়।
ফিডের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দেশের অন্যতম ফিড কোম্পানী আস্থা ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ এর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) আবদুল মালেক বলেন, এটি সত্য ফিডের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, ভোক্তা পর্যায়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে। কিন্তু ভোক্তার সাধারণের বুঝতে হবে, বর্তমানে আমরা কোন পরিস্থিতির মধ্যে দিন অতিবাহিত করছি।
তিনি বলেন, ফিড তৈরির মূল উপকরণ ভুট্টা ও সয়াবিন মিল। ২০২১ সনে যে ভুট্টার দাম ছিল ২২-২৩ টাকা; সেটি বর্তমানে সিজনের শুরুতেই হয়েছে ৩৫-৩৬ টাকা, সাধারণত এই সময়ে আমরা ২০-২১ টাকায় ভুট্টা ক্রয় করতাম এবং আস্তে আস্তে সেটি হয়তো ২৩-২৪ টাকার মধ্যে যেয়ে ঠেকতো। যে সয়াবিন মিলের দাম ছিল ৩৫-৩৮ টাকা সেটির দাম বর্তমানে ৮০-৮২ টাকা; তিন মাস আগেও সেটির দাম ছিল ৬০-৬২ টাকা কেজি। একটি ফিড তৈরি করতে ৫৫-৬০% ভু্ট্টা এবং ৩০-৩২% সয়াবিন মিলের প্রয়োজন হয়। অন্যদিকে ১ টন ফিড তৈরি করতে গেলে আমাদের ৩০-৩২ কেজি সয়াবিন তেলের প্রয়োজন হয়। এবার হিসেব করে দেখুন, এক বছর আগে এবং বর্তমানে সয়াবিন তেলের দামের পার্থক্য। এছাড়াও ফিড তৈরিতে ভিটামিন, প্রিমিক্সসহ আরো প্রায় ২৫-২৮ ধরনের উপাদান ব্যবহার করতে হয়; জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ বিল, পরিবহন খরচের হিসেব না হয় বাদই দিলাম।
আবদুল মালেক প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘দেশে দাম বাড়েনি এমন একটি পণ্যের নাম বলুন; প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়েছে; কোন কোনটি দ্বিগুণ, তিনগুণও হয়ে গেছে। অথচ ডিম ও মুরগির দাম নাম নিয়ে সবাই হৈ চৈ করেন; এটা কেন? আজ থেকে দেড় বছর আগে আমরা যে ফিড সাড়ে ৪৪ টাকা কেজিতে বিক্রি করতাম, সেটির দাম এখন দাড়িয়েছে প্রায় ৭৩ টাকায়। তারমানে, ফিডের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণের কাছাকাছি। সেই হিসেবে এক দেড় বছর আগে খুচরা পর্যায়ে প্রতি পিস ডিমের দাম ৭-৮ টাকা থাকলেও; খামারি পর্যায়ে এই দাম থাকে দেড়-দুই টাকা কমে। ফলে প্রচুর খামারি স্বর্বশান্ত হয়েছে। একটি মুরগির জন্য দৈনিক প্রায় ১২০ গ্রাম খাদ্য, সাথে ওষুধ, ভ্যাকসিন, লেবার, বিদ্যুৎ, ঘড়সহ আরো আনসঙ্গিক খরচ যোগ হলে বর্তমান বাজারে একটি ডিমের উৎপাদন খরচ কত পড়ে এবং খামারিরা আসলেই কতটুকু লাভ করতে পারছেন সেটি বের করা কঠিন কিছু নয়।
আমরাও চাই না ফিডের দাম বাড়াতে; কিন্তু আমরা বাধ্য হচ্ছি। দাম বাড়ানোর পরেও আমরা ফিডমিল চালাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছি, বিগত এক বছরে এমন একটি ফিডমিল খুঁজে পাবেন না যারা লোকসান না দিচ্ছেন। ইতিমধ্যে ছোট ও মাঝারি বহু ফিডমিল বন্ধ হয়ে গেছে এবং যাচ্ছে; অনেক কারখানা উৎপাদন বন্ধ রাখতে বা কমিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে। ভোক্তাদের কস্টটা আমরা বুঝি, একইসঙ্গে তাদেরকে খামারি ও ফিডমিলারদের কস্টটা বুঝতে হবে। সত্যিই বলতে আমরা এক অস্থির সময় অতিবাহিত করছি।
এসিআইএগ্রিবিজনেস প্রেসিডেন্ট ড. এফএইচ আনসারী বলেন, আমরা যদি অন্যান্য প্রোটিন উৎসের কথা চিন্তা করি তবে সেই তুলনায় ডিমের দাম দেশে এখনো কম। বাংলাদেশের পোলট্রি শিল্পের প্রয়োজনীয় প্রায় সব উপকরণ আমদানি নির্ভর; অপরদিকে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে প্রায় সবকিছুই নিজস্ব উৎপাদন; এরপরও সেখানে ডিম ও মুরগির দাম বেড়েছে। পোলট্রির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ, ডলার সবকিছু হিসেবে করলে ডিম ও মুরগির দাম আমাদের দেশে সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। এইটুকু দাম না পেলে খামারিরা নিরুৎসাহিত হবে, খামার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে। খামারি যদি তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পায়, তবে ডিম ও মুরগির দাম স্থিতিশীল পর্যায়ে থাকবে। আবার দাম অতিরিক্তি বেড়ে গেলে ভোক্তা সাধারণ মুরগি ও ডিম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবেন। তাই উভয় পক্ষের স্বার্থের দিকে সবার নজর দিতে হবে। এতে করে ভোক্তা ও খামারি উভয়পক্ষই লাভবান হবেন। নয়তো, উৎপাদন কিংবা বিপণনে ধ্বস নামলে, এসবের দাম স্থিতিশীল রাখা তখন আরো বেশি কঠিন হয়ে পড়বে।
ওয়াপসা-বিবি (ওয়াল্ডর্স পোলট্রি সায়েন্স এসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখা) সাধারণ সম্পাদক মো. মাহাবুব হাসান -এর মতে, ডিম ও মুরগিতে খামারিরা অনেক লাভ করছেন, দ্বিগুন দাম নিচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবতা তা নয়। বিগত কয়েক বছর ধরে ধারাবারাহিকভাবে ডিম ও মুরগির দাম না পাওয়াতে দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ খামার বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে খামারির সংখ্যা কমে যাওয়াতে উৎপাদন কমে গেছে। অন্যদিকে ডলারের দাম বেড়ে গেছে, কয়েক মাস আগেও যে ডলারের দাম ছিল ৮৪-৮৫ টাকা, সেটি এখন ১১০ টাকায় ক্রয় করতে হচ্ছে। ডলার সংকটের কারণে আমরা এখন ঠিকমতো এলসি খুলতে পারছি না। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দামও অনেক বেড়ে গেছে। এসব সার্বিক কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। অন্যদিকে ক্রমাগত লোকসানের কবলে পড়ে সারাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অসংখ্য খামার বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমান বাজারে ডিম ও মাংসের বেড়ে যাওয়ার এসবই অন্যতম প্রধান কারণ।