চাঁদপুরে বিদেশি রঙিন মাছ চাষে সফলতা অর্জন করেছেন তারেক হোসেন। প্রথমে শখের বশে শুরু করেছিলেন। মাত্র ৩ বছরে সাফল্য লাভ করেন। শুরুতে বাড়ির আঙিনায় ও একটি পরিত্যক্ত জমিতে মাছ চাষ করলেও বর্তমানে তিনটি বড় পুকুর ও বাড়ির পাশের পতিত জমিতে ৩০টি চৌবাচ্চাসহ প্রায় দেড় একর জমিতে মাছ চাষ করছেন। তাকে দেখে অনেকই মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
সূত্রে জানা যায়, তারেক হোসেন চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের চরবাকিলা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় একজন সফটওয়্যার ডেভেলপার। ঢাকার একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। তিনি ইউটিউব দেখে রঙিন মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেন। পরবর্তীতে ৪টি চৌবাচ্চা দিয়ে রঙিন মাছ চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তার খামারে গোল্ড ফিশ, কমেট, কই কার্ভ, ওরেন্টা গোল্ড, সিল্কি কই, মলি, গাপটি, প্লাটিসহ ১১ প্রজাতির মাছ আছে। বাড়ির আঙিনায় ও একটি পরিত্যক্ত জমিতে ছোট্ট পরিসরে চাষাবাদ শুরু করলেও বর্তমানে তার খামার প্রায় ১০ লাখ টাকার বিভিন্ন প্রজাতির অ্যাকুরিয়াম পিস রয়েছে।
তারেক হোসেন বলেন, আমার খামার থেকে উৎপাদিত মাছের পোনা বিক্রি করে বছরে প্রায় ৩-৩.৫ লাখ টাকা আয় করি। সরকারি জমি লিজ পেলে অধিক পরিশরে মাছ চাষ করে আরও বেশি লাভ করতে পারবো। পরিবারের লোকজনরা আমার সব সময় সহযোগিতা করে গিয়েছে। চাকরির কারণে বাড়ির বাইরে থাকায় আমার বাবা ও ছোট দুই ভাই মাছের দেখাশুনা করত। তাদের সাহায্যের কারনেই আমি মাছ চাষে এতটা লাভবান হতে পেরেছি।
উদ্যোক্তা তারেকের বাবা বিল্লাল হোসেন বলেন, আমার ছোটখাটো একটি দোকান ছিল। দোকানের আয় দিয়ে সংসার চালাতাম। ছেলে চাকরির পাশাপাশি মাছ চাষ করবে এটা শুনে আমি আপত্তি বোধ করেনি। বরং তাকে অনেক উৎসাহ দিয়েছি। তাকে সকল ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করেছি। পরবর্তীতে লাভজনক দেখায় নিজের দোকান ছেড়ে এইখানে সময় দেওয়া শুরু করি।
তারেক হোসেনের ছোট ভাই মো. হোসেন ও রাকিব হোসেন বলেন, আমরা শুরু থেকেই ভাইকে সকল ধরনের সাহায্য করে যাচ্ছি। মাছের সাথে খেলা করে সময় কাটাতে অনেক ভালো লাগে। আমরা ভাইয়ের এমন উদ্যোগে অনেক গর্বিত।
স্থানীয় বাসিন্দা জনি ও আব্দুল গনি বলেন, আমরা তারেকের মাছ দেখতে প্রায়ই আসি। এছাড়া এলাকার অনেক মানুষ আসে এই রঙিন মাছ দেখতে। রঙিন মাছগুলো দেখে অনেক আনন্দিত অনুভব হয়। ভবিষ্যতে তারেকের মতো আমরাও রঙিন মাছ চাষের পরিকল্পনা করছি।
চাঁদপুর সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তানজিমুল ইসলাম বলেন, অনেক শৌখিন মানুষ এসব রঙিন মাছ পালন করে থাকেন। এসব রঙিন মাছ চাষে খরচ বেশি। কিন্তু চাষাবাদে তেমন একটা সময়ের প্রয়োজন পরে না। একটু যত্ন ও নির্ধারিত সময়ে খাবার দিয়ে অনেক লাভবান হয়া যাবে। এই রঙিন মাছ চাষের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব।
সূত্র:আধুনিক কৃষি খামার।