ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ঠাকুরগাঁওয়ের খামারিদের মাঝে বাড়তি পরিচর্যা করার বিষয়টি লক্ষ্য করা গেছে। এখানকার খামারিরা প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও কোরবানির ঈদের লক্ষ্যে খামারের গরু দেশি পদ্ধতিতে ও প্রাকৃতিক ভাবে মোটাতাজাকরণ করছেন। তারা আশা করছেন ঈদের সময় অবৈধ পথে ভারত থেকে গরু না আসলে তাদের এতোদিনের পরিশ্রম সফলতার মুখ দেখবে।
জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলার সদরের সালান্দর আখানগর, গড়েয়া মিলনপুর, চন্ডিপুর এলাকার খামারিরা ঈদের উদ্দেশ্যে পালিত গরুকে বাড়তি পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। খামারিরা গরুকে ঘাস, খৈল, চিডা, ভুসি ইত্যাদি খাবার খাওয়ানোর মাধ্যমে মোটাতাজাকরণ করছেন। এতে কোনো পার্শপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই প্রাকৃতিকভাবে গরু মোটাতাজা হচ্ছে। যা ক্রেতাদের জন্য খুবই ভাল। তবে খামারিদের মনে একটাই চিন্তা যদি ভারত থেকে গরু আসে তাহলে দেশের খামারিদের অবস্থা খারাপ হবে। তারা ভাল দাম পাবেন না।
জেলার প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ঠাকুরগাঁও জেলার ৫টি উপজেলায় ৪ হাজার ৩১৭ জন খামারি পারিবারিক ও বাণিজ্যিকভাবে গবাদিপশু পালন করছেন। জেলায় প্রায় ৬৯ হাজার পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত হবে।
খামারি শামীম মিয়া বলেন, আমার খামারে ১১টি গরু রয়েছে। গরুগুলোকে প্রাকৃতিক সব খাবার খাওয়ানোর মাধ্যমে ঈদের জন্য প্রস্তুত করছি। আশা করছি লাভবান হতে পারবো।
খামারি হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ বলেন, আমি গত চার মাস আগে ৬০-৭০ হাজার করে ৩টি গরু কিনেছিলাম। আর কিছুদিন পর হাট বসতে শুরু করবে। হাটে বিক্রি করার জন্য এখন শেষ মুহুর্তের মোটাতাজাকরণের প্রস্তুতি চলছে। এবার যদি ভারত থেকে গরু না আসে তাহলে আমরা লাভবান হতে পারবো। সরকারের কাছে আমাদের একটাই আবেদন যেন ভারতের গরু দেশে ঢুকতে না পারে সেই দিকে নজর দিতে।
আরেক খামারি সোহেল মাহমুদ বলেন, আগের তুলনায় গোখাদ্যের দাম অনেক বেশি। তাই এখানকার খামারিরা দেশি পদ্ধতিতে ঘাস-খড়ের পাশাপাশি খৈল ও ভুসি খাওয়াচ্ছেন। গত বছর আমি হাটে ৪টি গরু বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকা আয় করেছিলাম। এবছর ৭টি গরু প্রস্তুত করছি। লালন-পালন খরচ আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। আশা করছি এবারও লাভবান হতে পারবো।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই জেলায় প্রতিটি খামারে আমরা আমরা প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে ভ্যাকসিন এবং চিকিৎসা সুবিধা দিচ্ছি। এছাড়াও দেশি পদ্ধতিতে মোটাতাজারকরণের কথা বলা হয়েছে। রোগবালাইয়ের প্রাদুর্ভাব থেকে বাচিয়ে রাখতে আমরা প্রায়েজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি।
সূত্র: আধুনিক কৃষি খামার।