টিভিতে একজন নারীকে মুরগি পালনে সফল হতে দেখে তারও আগ্রহ বাড়ে। পরে ২০০৩ সালে শখের বশে ২১ টি লেয়ার মুরগি নিয়ে লালন পালন শুরু করেন। তখন পরিবারের থেকে ৬ হাজার টাকা নিয়ে খামার শুরু করলেও সেই খামার থেকে ৩ মাসে তিনি ৩০ হাজার টাকা আয় করতে পারেন। বলছি, জয়পুরহাটের নারী উদ্যোক্তা সাজেদা খাতুনের কথা। তিনি মুরগির খামার করে সফল হয়েছেন। তার সফলতা দেখে অনেক নারীরাই মুরগি পালনে আগ্রহী হয়েছেন।
জানা যায়, নারী উদ্যোক্তা সাজেদা খাতুন জয়পুরহাট জেলা শহরের গুলশান মোড় এলাকার বাসিন্দা। তিনি ১৯ শতাংশ জমিতে মুরগি, ছাগল, ভেড়া লালন পালন করছেন। এছাড়াও তিনি মৎস্য চাষ ও ফলের বাগানও করেছেন। শখের বশে ২০০৩ সালে অল্প পরিসরে খামার করলেও তিনি ২০০৪ সালে মুরগির বিভিন্ন রোগ-বালাই সম্পর্কে জানার জন্য স্থানীয় প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে এক মাসের প্রশিক্ষণ নেন। তারপর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে ৩ মাস মেয়াদী গবাদি পশু, হাসমুরগি পালন, মৎস্য চাষ, প্রাথমিক চিকিৎসা, কৃষি বিষয়কসহ ৬টি ট্রেডে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে খামার গড়ে তোলেন। বর্তমানে তার খামারে ৩ হাজার সোনালি জাতের মুরগি, ১ হাজার ডিম পাড়া মুরগি ও দেড় হাজার ৭ দিনের বাচ্চা মুরগি রয়েছে। তার সফলতায় এলাকার অন্যান্য নারীরাও উদ্যোক্তা হওয়ার শক্তি পেয়েছেন।
সাজেদা খাতুন বলেন, আমি প্রথমে শখের বশে শুরু করলেও পরে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে খামার শুরু করি। নিজের পুঁজির পাশাপাশি ব্যাংক থেকেও ১৫ লাখ টাকা ঋণ নেই। বর্তমানে আমার খামারে মুরগির পাশাপাশি ছাগল, ভেড়াও রয়েছে। এছাড়াও এখন মাছের চাষ ও ফলের বাগান করেছি। সবগুলো মিলে মাসে প্রায় ১ লাখ টাকা আয় আসে। খামারের লাভের টাকা দিয়ে ২ বিঘা জমি কিনেছি।
খামার করে সাজেদা খাতুন এখন স্বাবলম্বী। তার সফলতার গল্প শুনতে স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা সহ প্রতিবেশী ও বিভিন্ন এলাকার মানুষরা আসেন। তিনি নিজে স্বাবলম্বীর পাশাপাশি ৩ জন কর্মীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। এছাড়াও প্রশিক্ষণের ফলে মুরগির যে কোন ধরণের সমস্য হলে নিজেই তার চিকিৎসা করতে পারেন বলে জানান সাজেদা খাতুন।
অদম্য সাহসী ও সফল আত্মকর্মী সাজেদা খাতুন ক্ষুদ্র ঋণে সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৫ সালে গভর্নর ড. আতিউর রহমানের নিকট থেকে গ্রহণ করেন সফল নারী উদ্যোক্তা পুরস্কার।
সূত্র: আধুনিক কৃষি খামার।