ছাগলের খাদ্য ব্যবস্থাপনায় যা করতে হবে সে বিষয়ে অনেকেই জানেন না।ছাগল পালন লাভজনক হওয়ার কারণে দিন দিন আমাদের দেশে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে ব্যাপকহারে ছাগল পালন করা হয়ে থাকে। ছাগল পালনের ক্ষেত্রে খাদ্য প্রদান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আজকের লেখায় আমরা জেনে নিব ছাগলের খাদ্য ব্যবস্থাপনায় যা করতে হবে সে সম্পর্কে-
ছাগলের খাদ্য ব্যবস্থাপনায় যা করতে হবেঃ
প্রত্যেক খামারির উচিৎ নিজের ছাগলের খাবার মেনু নিজে ঠিক করে নেওয়া। এটা হয়তো একদিনে সম্ভব না কিন্তু আস্তে আস্তে অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির সাথে ছাগলের খাবারের মেনুও ঠিক হয়ে যাবে-
খাদ্যের পরিমাণঃ
ছাগলকে কখনও এমন বেশী খাবার দেওয়া ঠিক না যাতে তার পেট শরীর থেকে বেশ খানিকটা বেরিয়ে আসে। ছাগলের যখন ক্ষুধা লাগে তখন তার পেট শরীরের মধ্যে ঢুকে যায়, খাবার খাওয়ার পর সেই পেটটা একদম শরীরের সমান্তরালে হবে, বেখাপ্পা উচু হবেনা। যেটুকু খাবার ছাগলের পেটকে শরীরের বাইরে নিয়ে আসবে সেই খাবারটুকু অপচয় হিসেবে ধরে নেওয়া যায়।
ছাগলের খাবার মেনুতে এই উপাদানগুলো থাকা উচিৎঃ
সকালের খাবারঃ
১। বিচালি/ঘাস/সাইলেজ (বিচালি দিলে সেটা চিটাগুড়+খৈল+লবন মিশিয়ে দিবেন)
বিকালের খাবারঃ
সকালের মত বিচালি/ঘাস/সাইলেজ এবং দানাদার হিসেবে নিচের খাবারগুলো দিবেন।
১। বুট/ডাবলির ভূষি (গম+মুসুরি+বুট তিনটা অল্প অল্প পরিমাণে মিক্স করেও খাওয়াতে পারেন)
২। সামান্য পরিমাণে ডিসিপি/ডিবি পাউডার।
৩। সামান্য লবন (ঐচ্ছিক, ডিসিপি/ডিবি দিলে লবন না দিলেও চলে।
৪। ভূট্টা ভাঙ্গা (একেবারে পাউডারটা না দেওয়াই ভালো, ভূট্টা ভাঙ্গাকে সরাসরি শুকনো অবস্থায় দেওয়া যায়, ১২/২৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে দেওয়া যায় আবার সিদ্ধ করেও দেওয়া যায়। তবে আমি কখনো সিদ্ধ করে খাওয়াইনি, এটা আমার পছন্দও না।
৫। খৈল (সয়াবিন বা সূর্যমুখীর খৈল হলে ভালো হয়, সরিষার খৈল ও দিতে পারেন। তবে সরিষার খৈল দিলে ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে তারপর দিবেন, গুড়ো করেও দিতে পারেন।
৬। অঙ্কুরিত ছোলা+ বাদাম (ছোলা ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে পানি ঝরিয়ে পরিষ্কার কাপড়ের পোটলায় ১২ ঘণ্টা মুড়িয়ে রাখলে অঙ্কুরিত হয়ে যাবে। তবে ছোলা এবং বাদাম না দিলেও সমস্যা নেই, এটা খাসীকে দিলে খুব ভালো রেজাল্ট পাওয়া যায়।অন্যান্যঃ সপ্তাহে একদিন দানাদারের সাথে ভিটামিন প্রিমিক্স খাওয়ানো ভালো। সপ্তাহে একদিন জিঙ্ক খাওয়াবেন। একদিন হাড়ের গুড়া জাতীয় ক্যালসিয়াম খাওয়াবেন।
সূত্র: আধুনিক কৃষি খামার।