রংপুরে উন্নত জাতের নেপিয়ার ঘাস চাষ দিনদিন বাড়ছে। গবাদিপশুর খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে কৃষকরা বাজারে বিক্রয় করে আয় করছেন হাজার হাজার টাকা। খড়ের বিকল্প গরু-ছাগলসহ অন্যান্য গবাদিপশুকে খাদ্য হিসেবে দেওয়া হচ্ছে নেপিয়ার ঘাস।
রংপুর জেলার তারাগঞ্জ, গংগাচড়া, পীরগগঞ্জ, মিঠাপুকুর,বদরগঞ্জ, পীরগাছা, কাউনিয়া, ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপকহারে নেপিয়ার ঘাসের চাষ হচ্ছে।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষি ও পতিত জমি এবং বাড়ির আশপাশে নেপিয়ার ঘাসের চাষ লড়্গ্য করা যায়। খড়ের চেয়ে এখন এই ঘাসের চাহিদা অনেক বেশি। কৃষক ও খামারিরা নেপিয়ার ঘাস চাষে উদ্যোগী হয়ে উঠছেন।
কৃষকরা অল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে নেপিয়ার ঘাসের চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। এ জাতের ঘাস রোপণের এক থেকে দু’মাসের মাথায় কাটার উপযোগী হয়ে যায়। দ্বিতীয় পর্যায়ে গোড়া থেকে চারা গজায়। সে ক্ষেত্রে দেড় থেকে দু’মাসের মধ্যে কাটার উপযোগী হয়। একটি গোছা থেকে ১২-১৫ কেজি ঘাস হয়। একবার বীজ বুনলে বা চারা রোপণ করলে কয়েক বছর ঘাস পাওয়া যায়।
পীরগাছা উপজেলার তাম্বুলপুর গ্রামের আয়াতউলস্নাহ জানান, নেপিয়ার ঘাস চাষ করে নিজস্ব গবাদিপশুর খাদ্য চাহিদা পূরণের পর বাজারে বিক্রয় করছি। এতে নিজের যেমন চাহিদা মিটছে তেমনি বাজারে বিক্রয় করে লাভবান হওয়া যাচ্ছে।
একই এলাকার খামারি ফারম্নক বলেন, আমার খামারে ৭টি গরু রয়েছে। খড়ের দাম বেশি হওয়ায় এখন এই ঘাস খাওয়ানো হচ্ছে। নেপিয়ার ঘাস চাষ গরুর খাবারের চাহিদা মিটছে।
কাউনিয়া উপজেলার রাজীব গ্রামের গরম্ন খামারী বলেন, এই ঘাস চাষ করে গরু-ছাগলকে খাওয়ানোর পাশাপাশি জমি থেকে ঘাস বিক্রিও করছি। ঘাসের টাকায় সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। ছেলে-মেয়ের পড়াশোনার খরচ, জমির সার-কীটনাশক কেনার জন্য আগের মতো কষ্ট করতে হয় না।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় নেপিয়ার ঘাসের চাহিদা অনেক বেশি। নেপিয়ার ঘাস একটি বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। একবার লাগালে কয়েক বছর ধরে ঘাস পাওয়া যায়। অন্য ফসলের মতো নেপিয়ার ঘাসের পরিচর্যা করা লাগে না। সময়মতো সেচ আর সামান্য সার দিলেই ভালো ফলন হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জোবাইদুল কবীর বলেন, কম বেশি সব জায়গাতে এখন নেপিয়ার ঘাস চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে বেশি চাষাবাদ হয় বদরগঞ্জ, পীরগাছা ও সদর উপজেলায়। এখন খড়ের বিকল্প হিসেবে ঘাসের চাহিদা বেড়েছে। কৃষক ও খামারিরা নিজেরাই ঘাস উৎপাদনে ঝুঁকছেন। প্রতিটি উপজেলাতে নেপিয়ার ঘাসের বাজারও তৈরি হয়েছে।
সূত্র: আধুনিক কৃৃষি খামার।