আমাদের যেমন জ্বর, কাশি, ঠান্ডা ও নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকি তেমনি পানিতে বসবাসকারী মাছ ও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে তার মধ্যে মাছের লেজ ও পাখনা পঁচা রোগ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। চাষকৃত মাছ এ রোগ হয়ে থাকলে মৎস্য চাষি খুব বিব্রত অবস্থায় পড়ে যায় এবং সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না করতে পারলে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকেন তাই আপনাদের মাছের লেজ ও পাখনা পঁচা রোগের কারণ, প্রতিরোধ, প্রতিকার, করণীয় সম্পর্কে জানা জুরুরি।
কারণ: পানিতে জৈব পদার্থের উপস্থিতি, বিষাক্ত গ্যাস, পানির পিএইচ, ক্ষারত্বের স্বল্পতা, মিক্সোব্যাকটার ও এরোনোস নামক ব্যাকটেরিয়ার এই রোগের সৃষ্টি করে।
প্রতিরোধ : চাষকৃত পুকুরে প্রতি শতাংশে/ ফুট গভীরতায় ১ কেজি চুন প্রয়োগ করা, মজুদ ঘনত্ব ঠিক রাখা, পুকুরের আশপাশ ঝোপঝাড় গাছের ডালপালা কেটে দেওয়া সূর্যের আলো পর্যাপ্ত রাখার ব্যবস্থা, পুকুরে নিয়মিত হররা টানা ও বিষাক্ত গ্যাস দূর করা।
রোগের লক্ষণ: মাছের পৃষ্ঠ পাখনা প্রথমে আক্রান্ত হতে দেখা মিলে পরবর্তীতে মাছের অন্যান্য পাখনায় ছড়িয়ে পড়ে, মাছের পাখনা বঙ্গুর হয়ে যায়, পাখনার পর্দা ছিড়ে যায়, আক্রান্ত স্থানে মিউকাস (দেহে পিচ্ছিল পদার্থের উপস্থিতি কমে যায়) মাছ ঝাঁকুনি দিয়ে চলাফেরা করে, মাছের পাখনা সাদাটে দাগ দেখ যায় আক্রান্ত স্থানে তোলার ন্যায় দেখায়, মাছের রক্ত শুন্যতা দেখা দেয়, মাছের ক্ষুধা মন্দা দেখ দেয়। মাছ ভারসাম্যহীন হয়ে যায়।
প্রতিকার: প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ পিপিএম পটাশ ০২ থেকে ০৩ মিনিট আক্রান্ত মাছকে ডুবিয়ে রেখে পুণয়ায় ছেড়ে দিতে হবে, ২৪ থেকে ৩৬ গ্রাম পটাশ প্রতি শতাংশ/ফুট গভীরতায় প্রয়োগ করতে হবে, অক্সিটেট্রাসাইক্লিন ২৫ মি.গ্রাম পরপর সাতদিন দিতে হবে, মিরাকল নাইম প্রতি একরে ২৫ কেজি প্রয়োগ করা যেতে পারে। রোগের তীব্রতা বেশি হলে সে মাছগুলো সরিয়ে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে।
আক্রান্ত প্রজাতি : সাধারণত রুই, পাঙ্গাস, শিং, মাগুর হয়ে থাকে।
কৃষক ও মৎস্যচাষী ভাই, উপরোক্ত নিয়মাবলী অনুসরণ করলে মৎস্য চাষে উপকৃত হতে পারেন এবং মৎস্য চাষ ব্যবস্থাপনা বিস্তারিত জানতে আপনার নিকটস্থ মৎস্য অফিসে যোগাযোগ করুণ।
খালেক হাসান
কৃষি তথ্য কেন্দ্র সংগঠক
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তর, কুমিল্লা।