সাধারণত বাড়ির ছাদে সবজি ও ফল চাষ করা হয়। বর্তমানে বাড়ির ছাদে মাছও চাষ করা হচ্ছে। তবে বাড়ির ছাদে সবচেয়ে সহজ হলো মুরগি পালন করা। গ্রামে বা শহরের বাড়ির ছাদে মুরগি পালন করা যায়।
বাড়ির ছাদে পালন করার জন্য সবচেয়ে উপযোগী হলো মুরগি বা জাপানি কোয়েল পাখি। তবে কবুতর ও তিতির চাষ করা যেতে পারে। বিশেষ করে ছাদে মুরগি পালন করতে হলে ডিম উৎপাদনের জন্য লেয়ার মুরগি পালন করা ভালো। আমাদের দেশে লেয়ার মুরগির বিভিন্ন জাত রয়েছে। ছাদে পালনের উপযোগি কিছু হাইব্রিড জাত হলো লোহম্যান ব্রাউন, হাই-লাইন ব্রাউন, ব্যাবোলনা টেট্রা এস এল, নিক চিক ব্রাউন, বোভানস গোল্ড লাইন, বি. ভি. -৩০০, ইসা ব্রাউন ইত্যাদি।
হাইব্রিড জাতের মুরগি সাড়ে ৪ মাসে ডিম দেওয়া শুরু করে। তা প্রায় দেড় বছর পর্যন্ত দিয়ে থাকে। এতে জাত ভেদে প্রতিটি মুরগি বছরে প্রায় ২৮০-৩৩০টি পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে।
দুটি ভাগে মুরগি পালন করা যায়। প্রথমে বাচ্চা মুরগি পালন, তারপর বয়স্ক মুরগি পালন। মুরগি পালনের অনেক গুলি পদ্ধতির মধ্যে ছাদে পালনের উপযোগি পদ্ধতি হল ব্যাটারি বা খাঁচা পদ্ধতি। বিশেষভাবে তৈরি খাঁচার ভিতর মুরগি পালন করা হয়। এ খাঁচা মুরগির সংখ্যার উপর নির্ভর করে এক তলা বা বহু তল তৈরি করা হয়। খাঁচা পদ্ধতিতে তুলনামূলক জায়গা কম লাগে এবং পদ্ধতিতে মুরগির রোগজীবাণুর আক্রমণ ও কম হয়। ডিম পাড়া মুরগির জন্য এটি একটি আর্দশ পদ্ধতি।
এই পদ্ধতিতে মুরগি পালন করলে তুলনা মুলক খাদ্য খরচ কম হয় এবং ডিম উৎপাদন বেশি হয়। খাচা তৈরিতে প্রাথমিক খরচ কিছুটা বেশি হয়। তবে একই খাঁচা বার বার ব্যবহার করা যায়।
৩ ফুট লম্বা, ১ ফুট চওড়া, ১.২ ফুট উচ্চতার একটি খাচায় ৬ টা মুরগি পালন করা যায়। এমন তিনটি খাচা একত্র করে একটি তিন তলা বিশিষ্ট খাচা তৈরি করা যায়। যেখানে মোট ১৮ টা মুরগি পালন করা যায়।
নিয়মিত পরিচর্যা এবং রোগবালাই দমন করতে হবে। নিয়মিত মল পরিস্কার করতে হবে, অতিরিক্ত খাবার না দেয়া সদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, কোন রোগ বালাই বা চাল চলনে সমস্যা আছে কিনা লক্ষ্য রাখা, মুরগির মল তরল এবং চুনার মত কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখা, কোন রোগ বালাই বা সন্দেহজনক কিছু লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ভেট ডক্টরের পরামর্শ নেয়া।