নিজেকে সফল কর্মী হিসেবে প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখায় জাতীয় যুব পুরস্কার পেয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়নের কুমারপাড়া গ্রামের আমিষ ফুডস অ্যান্ড অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. বিল্লাল মিয়া।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় যুব দিবসের অনুষ্ঠানে গত ১ নভেম্বর যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে মেধাতালিকায় স্থান পাওয়া মতিউর রহমান বিল্লাল মেকানিক্যাল প্রকৌশল বিদ্যায় পড়াশোনা শেষ করে ব্যতিক্রম কিছু করার চেষ্টা করেন। তার সঙ্গে সহযোগিতার হাত বাড়ান আরও দুই মেধাবী যুবক প্রকৌশলী আব্দুল আজিজ ও প্রকৌশলী আব্দুল আলীম।
স্বপ্নচারী তিন যুবক সব প্রতিকূলতাকে পেছনে ফেলে আড়াইহাজার উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়নের কুমারপাড়া নিজ গ্রামে ১০ বিঘা জমির ওপর ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে ‘আমিষ ফুডস অ্যান্ড অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’ নামে ডেইরি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন।
২০২০ সালে শুরু করা হয় বাণিজ্যিকভাবে দুধ ও মাংসের জন্য গরুর খামার। সাত লাখ টাকা বিনিয়োগ করা তাদের সেই ডেইরি খামারের এখন সম্পদের পরিমাণ প্রায় কয়েক কোটি টাকা। সফল উদ্যোক্তা হিসেবে পেয়েছেন ইতোমধ্যে জাতীয় স্বীকৃতি।
বিল্লাল জানান, উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন প্রতিনিয়ত। আর সেই থেকেই তাদের পথচলা শুরু। তাদের খামারটি এখন শুধু দুধ উৎপাদন করেই থেমে নেই, তৈরি করছে দুগ্ধজাতীয় খাবার এবং পালন করছে মাংস উৎপাদনকারী গরুও।
খামারটি সর্বসাকল্যে বর্তমানে ১২৩ বিঘায় বিস্তৃত। এর মধ্যে রকমারি প্রাণবৈচিত্র্য ও প্রাণিসম্পদের খামারের আয়োজনটি ১১ বিঘায়। এ খামারে বর্তমানে কাজ করছেন ৫৪ শ্রমিক। এলাকার তরুণদের আদর্শ হয়ে উঠেছে আমিষ ফুডস অ্যান্ড অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। বর্তমানে ওই খামারে নিয়মিত দুধ দেয় এমন গাভীর সংখ্যা ৫২টি। গত কুরবানিতেও এ খামারের একটি বাণিজ্যিক সাফল্য রয়েছে। আগামী কুরবানির জন্য গরু মোটাতাজাকরণ শুরু হয়েছে।
বিল্লাল জানান, শেডে গরু তোলার আগেই ঘাসের শতভাগ জোগান নিশ্চিত করে নিচ্ছেন তিনি।খামারে রয়েছে চার প্রজাতির ১৫৮ ছাগল, ২৬টি টার্কিশ দুম্বা, ৬টি হরিণ, দুই প্রজাতির হাঁস ও পুকুরে মাছের চাষ ইত্যাদি।
একটি শেডে রয়েছে রঙবেরঙের পাখপাখালি। কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত। খামারের এক পাশে পুকুর। সেখানে চলছে মাছ চাষ। পুকুর পাড় ঘেঁষে হাঁসের খামার। আছে দুই প্রজাতির হাঁস। রাজহাঁস ও খাকি ক্যাম্বেল।
বিল্লাল জানালেন, খামারে ১৫০০ ক্যাম্বেল ও রাজ হাঁস, ৪৩টি খরগোশ, ৮০টি কবুতর, ১৪টি সৌখিন পাখিসহ পুকুরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রয়েছে।
আমিষ ফুডস অ্যান্ড অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল আজিজ বলেন, বাণিজ্যের পাশাপাশি মানুষকে নির্ভেজাল পণ্য পৌঁছে দেওয়ার প্রচেষ্টাতেই এ উদ্যোগ। উদ্যোগের সঙ্গে যতটা না বাণিজ্যিক লাভের বিষয় যুক্ত তার চেয়ে বেশি সামাজিক দায়বদ্ধতা।
কপি পোষ্টঃ যুগান্তর নিউজ