মোঃ সবুজ ইসলাম, ঠাকুরগাঁওঃ রামরাই দিঘি। এটি উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলের প্রাচীনতম একটি দিঘি। এই দিঘির জলকর সর্বোচ্চ মূল্য দিয়ে বছরের জন্য ইজারা নেয় মৎস্যচাষীরা।
এসেছে শীত। এই শীতে অতিথি পাখিতে মুখরিত সেই রামরাই দিঘি। এটি বৃহৎ ও অন্যতম প্রাচীনতম যেমন একটি দিঘি তেমনি পর্যটন কেন্দ্র বটেও। সমস্ত উপজেলা জুড়ে এটিই একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র। শুধু মানুষের বিনোদন কেন্দ্র নই শীতকালে অতিথি পাখিদের বিনোদনের স্থান। শীত এলেই সেই অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত হয়ে ওঠে সমস্ত দিঘি। এ যেন অতিথি পাখির মেলা বসে। আর সেই অতিথি পাখি দেখতে দর্শনার্থীদের ভীড় জমছে প্রতিনিয়ত।
শীত এলেই নতুন রুপে সাজে পুরো দিঘির জলাশয়। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাখি ও জলাশয়ের প্রাকৃতিক নয়নাভিরাম দৃশ্য সত্যিই মনোমুগ্ধকর। প্রতিবছর শীত এলেই এসব পাখি এখানে এসে প্রকৃতিকে সাজায় নতুন সাজে। পাখি প্রেমী ও সৌন্দর্য পিপাসুরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত পর্যটন কেন্দ্র’র পাখিগুলোকে দেখার জন্য ছুটে আসেন প্রতিনিয়ত।
প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির সমাগম হয়েছে রামরাই দিঘিতে। পাখিদের কলকাকলিতে পুরো এলাকা মুখরিত। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতিদিন ঝাঁকে ঝাঁকে থাকছে অতিথি পাখির দল। পাখিদের মুহুর্মুহু কলতানে পুরো এলাকা পরিণত হয়েছে পাখির স্বর্গরাজ্যে। সন্ধ্যা নামলেই দিঘীপাড়ের লিচু বাগানে আশ্রয় নেয় এসব পাখি। পাখিদের এই মুহুর্মুহু কলতানের টানে প্রতিদিনই দুর-দুরান্ত থেকে রামরাই দিঘিতে ছুটে আসছেন পাখি প্রেমী পর্যটকরা।
এ দেশের নদ-নদী, হাওর-বাওড়ের ভালোবাসার টানে হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে রামরাই দিঘীতে আসে এসব পাখি । উপজেলা শহর থেকে ৪ কিমি দূরে উত্তরগাঁও মৌজায় বরেন্দ্র অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম জলাশয় রামরাই দিঘীর অবস্থান।
দিলীপ ও সবুজ নামের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রামরাই দিঘিতে নভেম্বরের শেষে অতিথি পাখি আসা শুরু করে। যা শীতের শেষ পর্যন্ত অবস্থান নেয়। এ পাখি গুলো অনেক দূর থেকে আসে আমরা শুনেছি। এ পাখি গুলো যখন আসে দর্শনার্থীদের আসার প্রবণতা একটু বেশি বেড়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, পাখি গুলো সকালে একবার দিঘিতে আসে কিছু সময় অবস্থান করার পরে বিভিন্ন বিলে চলে যায়। পরে বিকেলে আবারো আসে যা সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকে। আর রাত হলেই পাড়ের গাছে অবস্থান নেয়।
মিলন,তুহিন নামের দর্শনার্থী জানান, রামরাই দিঘিটি এখন নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। আগের থেকে এখন অনেক সুন্দর হয়েছে। রামরাই দীঘিতে অতিথি পাখি এসেছে শুনে দেখতে এসে বেশ ভালো লাগছে।
দিঘির ইজারাদার মৎস্যচাষী নওরোজ কাউসার কানন জানান, অতিথি পাখির আগমনে আমরা অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তারপরও পাখিদের যেন সুন্দর একটি অভয়ারণ্য গড়ে ওঠে সেদিকে খেয়াল রাখছি। এবং দর্শনার্থীরা যেন পাখিদের কোনো প্রকার ক্ষতি করতে না পারে সেদিকে আমরা সজাগ দৃষ্টি রাখছি।
সূত্র :আধুনিক কৃষি খামার