শখের বশে মাত্র ১২ হাজার টাকা দিয়ে একটি ছাগল কিনে খামার শুরু করেন। বর্তমানে তার খামারে ছোট-বড় মিলে প্রায় ৫০টি দেশি-বিদেশি ছাগল রয়েছে। বলছি, মাদারিপুরের সদর উপজেলার নারী খামারি কোহিনূর বেগমের কথা। তিনি তার বাড়ির পাশেরই ছাগলের খামার গড়ে তোলেন। এর পালনে খরচ কম লাগায় ও ধীরে ধীরে ছাগলের সংখ্যা বাড়তে থাকায় এর পালনকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন। বর্তমানে তার খামারে প্রায় ৫ লাখ টাকার ছাগল রয়েছে।
জানা যায়, নারী খামারি কোহিনূর বেগম মাদারীপুর সদর উপজেলা উত্তর মহিষেরচর এলাকায় কৃষক ফেরদৌস মিয়ার স্ত্রী। গত ২ বছর আগে শখের বশে তিনি একটি ছাগল পালনের মাধ্যমে খামার শুরু করেন। সেই একটি থেকে এখন তার খামারে ৫০টি হয়েছে। সবগুলো ছাগলের দেখাশোনা তিনি নিজেই করেন। এছাড়াও খামারের পরিধি বড় করার জন্য বাড়ির পাশে আরেকজনের জমিও ক্রয় করেন তিনি। অল্প খরচে ছাগলের পালন করে তিনি লাভবান হচ্ছে। পাশাপাশি অন্যদেরও স্বাবলম্বী হওয়ার অনুপ্রেরণা দিচ্ছেন।
কোহিনূর বেগম বলেন, আমি শখের বশে ২০২১ সালে ১২ হাজার টাকায় একটি ছাগল কিনে লালন-পালন শুরু করি। বছর ঘুরতেই ছাগলটি ৮টি বাচ্চা দেয়। তখন ছাগলগুলো বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকা আয় করি। তারপর বাণিজ্যিকভাবে এর খামার করার পরিকল্পনা করি। অনলাইনের মাধ্যমে দেখে যমুনা পাড়ি, তোজাপাড়ি ও ব্লাক বেঙ্গল প্রজাতির ছাগল কিনে খামার গড়ে তুলি। বর্তমানে আমার খামারে ৩ প্রজাতির ৫০টি ছাগল রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ঘাস ছাগলের জন্য উৎকৃষ্ট খাবার হওয়ায় বাড়ির পাশে ঘাসের আবাদ করেছি। এছাড়াও আমার খামারের ছাগলগুলোকে গম, ভুট্টা ও ছোলা বুটের গুড়ো, সেই সঙ্গে সয়াবিন ও খড়ের ছন খাইয়ে থাকি। সবগুলো ছাগলের দেখাশোনা আমি নিজেই করি। এছাড়াও আমার স্বামী ও পরিবারের লোকজন সাহায্য করেন। বছরে দুইবার বাচ্চা দিয়ে থাকে। প্রতিবার একাধিক বাচ্চার জন্ম হয়। আর বছরে একবার পিপিআর, গডপক্স ভ্যাকসিন দিলেই আর কোনো ওষুধ লাগে না। তাই খুব অল্প খরচেরই এর লালন পালন করা সম্ভব। খামার দেখতে অনেকেই আসে। অনেকে আবার আমার কাছ থেকে খামার করার পরামর্শও নিচ্ছেন।
খামার দেখতে আসা ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ছাগল পালন একটি লাভজনক পেশা। আমাদের দেশের ছাগলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বাজারে এর মাংসেরও ভাল দাম রয়েছে। কোহিনূর বেগমের খামার করে স্বাবলম্বী হওয়ার খবর শুনে খামারটি দেখতে এসেছি। তার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছি। আমিও ছাগলের খামার করতে চাই।
মাদারীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রাথমিকভাবে ছাগল পালনে কোহিনূর বেগম সফলতা পেয়েছেন। আমরা তাকে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে দিচ্ছি। তার দেখাদেখি অনেকেই খামার করতে আগ্রহী হয়েছেন এবং আমাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন।
সূত্র:আধুনিক কৃষি খামার।