খরগোশ নিরীহ স্বভাবের প্রাণী। এরা তৃণভোজী। নানা রকম ঘাস খেতে পছন্দ করে। খরগোশ অন্য প্রাণীর তুলনায় বাচ্চা উৎপাদন বেশি করে। খাঁচায় খরগোশ পালন করা যায়। রোগ-ব্যাধি কম, বাজারে চাহিদাও আছে। সে কারণে খরগোশ পালনে মানুষের উৎসাহ বাড়ছে। শখ পূরণের পাশপাাশি আয়ও করছেন অনেকে।
ফ্যান্সি জাতের খরগোশ জনপ্রিয় বেশি। বাংলাদেশে লায়নহেড, হল্যান্ড লপ, মিনি লপ, লায়ন লপ এবং হটট ডোয়ার্ফ জাতের খরগোশের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এগুলোর মধ্যে জায়ান্ট অ্যাংগোরা ৬-১০ হাজার টাকা জোড়া, সাটিন অ্যাংগোরা ৬-১০ হাজার টাকা জোড়া, নেদারল্যান্ড ডোয়ার্ফ ১২-১৪ হাজার টাকা জোড়া, লায়নহেড ২৪-৩০ হাজার টাকা জোড়া, মিনি লপ ২৪-৩০ হাজার টাকা জোড়া, হল্যান্ড লপ ২৪-৩০ হাজার টাকা জোড়া, লায়ন লপ ২৪-৩০ হাজার টাকা জোড়া।
খরগোশের প্রধান খাবার ঘাস। সকাল, দুপুর, বিকাল এবং রাতে ঘাস খেতে দিয়ে হয়। নপিয়ার, পাকচন ঘাস এরা পছন্দ করে। খরগোশের শরীরের ওজন যত কেজি। প্রতিকেজি ওজনের জন্য ৫০ থেতে ৬০ গ্রাম খাবার দিতে হয়। তাও আবার গাভির ফিড।
সপ্তাহে দুইদিন সবজি এবং সপ্তাহে দুইদিন ফল। সবজির মধ্যে গাজর, শসা, বরবটি, শালগম, কপি, কলমি, মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি দেওয়া যায়। আপেল, তরমুজ, কলা ইত্যাদি খেয়ে থাকে। একটি খরগোশের জন্য ৫ স্কয়ার ফিট জায়গা ন্যূনতম প্রয়োজন। গড়ে খরগোশ প্রতি মাসে পাঁচ থেকে সাতশ টাকা খরচ হয়।
খরগোশ সাধারণত ৫-৬ মাস বয়সে প্রজনন করতে সক্ষম হয়। ছেলে খরগোশের এ সময়টা লাগে ন্যূনতম ৭ মাস। ৫ থেকে ৭ মাস ব্রিডিংয়ে দেওয়ার উত্তম সময়। মেটিংয়ের ২৮-৩৫ দিন পরে এদের বাচ্চা প্রসব হয়। সাধারণত ৪৫-৫৫ দিন বাচ্চারা মায়ের দুধ খায়। তবে ১৮-২০ দিন বয়স থেকেই মায়ের সাথে অন্য খাবার খাওয়া শিখতে শুরু করে। বাচ্চাদের বয়স ২ মাসের আগ পর্যন্ত মায়ের থেকে আলাদা করা উচিত নয়।
প্রতিবার ব্রিডিং থেকে গড়ে ১০টি বাচ্চা পাওয়া সম্ভব। বছরে তিনবারের বেশি বাচ্চা প্রসব করালে নানা রকম অসুবিধা দেখা দিতে পারে। যেমন বাচ্চা দুর্বল হয়, দুধের উৎপাদন কমে যায়, মায়ের স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায়।
খরগোশের জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জায়গার দরকার। স্যাঁতসেঁতে বা নোংরা জায়গায় রাখলে এদের মাইটস নামক রোগ হয়, যা এক পর্যায়ে তাদের মৃত্যুর কারণ হতে পারে। এ ছাড়া কিছু সাধারণ রোগ আছে, যেমন ঠান্ডা লাগা এবং পাতলা পায়খানা। স্যাঁতসেঁতে জায়গার কারণে এদের ঠান্ডা লাগতে পারে। যা ওষুধে নিরাময়যোগ্য। অতিরিক্ত দানাদার খাবার বা সবজি দেওয়ার কারণে পাতলা পায়খানা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বাংলাদেশে খরগোশের চিকিৎসা সহজলভ্য। কারো ইচ্ছে হলে বাণিজ্যিকভাবে খরগোশ পালন করতে পারবেন। সে জন্য ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে। খরগোশ পালনে বাংলাদেশে কোনো বিধিনিষেধ নেই। এটি বাংলাদেশ লাইভস্টকের আওতাভুক্ত।
দীর্ঘদিন ধরে ফ্যান্সি জাতের খরগোশ পালন করছেন তোহা আহমেদ। শতাধিক খরগোশ আছে তার খামারে। নতুন খরগোশ পালকদের জন্য তার পরামর্শ হলো, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জায়গা, ঘাসের সরবারহ, বিশুদ্ব পানির ব্যবস্থা থাকতে হবে। খরগোশকে ন্যূনতম ৫ স্কয়ার ফিট জায়গা দিতে হবে।
খরগোশের জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জায়গার দরকার। স্যাঁতসেঁতে বা নোংরা জায়গায় রাখলে এদের মাইটস নামক রোগ হয়, যা এক পর্যায়ে তাদের মৃত্যুর কারণ হতে পারে। এ ছাড়া কিছু সাধারণ রোগ আছে, যেমন ঠান্ডা লাগা এবং পাতলা পায়খানা। স্যাঁতসেঁতে জায়গার কারণে এদের ঠান্ডা লাগতে পারে। যা ওষুধে নিরাময়যোগ্য। অতিরিক্ত দানাদার খাবার বা সবজি দেওয়ার কারণে পাতলা পায়খানা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বাংলাদেশে খরগোশের চিকিৎসা সহজলভ্য। কারো ইচ্ছে হলে বাণিজ্যিকভাবে খরগোশ পালন করতে পারবেন। সে জন্য ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে। খরগোশ পালনে বাংলাদেশে কোনো বিধিনিষেধ নেই। এটি বাংলাদেশ লাইভস্টকের আওতাভুক্ত।
দীর্ঘদিন ধরে ফ্যান্সি জাতের খরগোশ পালন করছেন তোহা আহমেদ। শতাধিক খরগোশ আছে তার খামারে। নতুন খরগোশ পালকদের জন্য তার পরামর্শ হলো, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জায়গা, ঘাসের সরবারহ, বিশুদ্ব পানির ব্যবস্থা থাকতে হবে। খরগোশকে ন্যূনতম ৫ স্কয়ার ফিট জায়গা দিতে হবে।
যেখানে পাবেন
ঢাকার কাঁটাবন, মিরপুর, কাপ্তান বাজারসহ বিভিন্ন পশু-পাখি ও অ্যাকুরিয়ামের দোকানে পাওয়া যায়। ঢাকার বাইরে গাজীপুরের টঙ্গী মার্কেট, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায়ও পাওয়া যায়। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, সিলেট, সাভার, নারায়ণগঞ্জ, বগুড়া, পাবনা, নেত্রকোণাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে কিনতে পাওয়া যায়।
মজার কিছু তথ্য
খরগোশ খুব ভালো সঙ্গী হতে পারে। স্বাধীনতা এবং সুযোগ পেলে ব্যক্তিত্ব দেখাতে মোটেও ভুল করে না। মাঝে মাঝে লাফিয়ে লাফিয়ে মাথা ও পা ঝাঁকায়। এটাই আনন্দ প্রকাশের মাধ্যম। এ আচরণ খরগোশ সম্প্রদায়ের মধ্যে ‘বিঙ্কি’ নামে পরিচিত। স্ত্রী খরগোশকে ‘ডো’ বলা হয় এবং পুরুষ খরগোশকে ‘বাক’ বলা হয়।
খরগোশের বড় কান শুধু শোনার জন্য নয়। কান খরগোশের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতেও সাহায্য করে। গরম হলে কানের রক্তনালী ফুলে যায়। ঠান্ডা হলে সংকুচিত হয়। শান্ত মনে হলেও খরগোশ শব্দ করতে পারে। খরগোশ খুব ভালো লাফ দিতে পারে। ৩ ফুট উঁচু, ১০ ফুট লম্বা, এতটুকু দূরত্ব তাদের লাফের পরিসীমা। তাদের চোখ মাথার পাশে অবস্থিত, এ কারণে খরগোশ প্রায় নিখুঁত ৩৬০ ডিগ্রি দেখতে পারে। দেখার এ সুবিধা শিকারীর অবস্থান বুঝতে সাহায্য করে।
বেশিরভাগ খরগোশের একটি ‘মিষ্টি দাঁত’ আছে। খরগোশ ফল খেতে পছন্দ করে। রলফ নামের একটি খরগোশ, যার ওজন ৫৫ পাউন্ড। সে সপ্তাহে ৯০ ডলারের খাবার খায়! গিনেস বুকে নাম লিখিয়েছে সে। খরগোশের গড় আয়ু ৭ থেকে ১০ বছর, কিন্তু সবচেয়ে বয়স্ক খরগোশটির বয়স ১৭ বছর।
খরগোশ যখন নিচের দিকে ঝুঁকে পড়বে। নিজেকে ছোট, আড়ষ্ট করে ফেলবে। তখন বুঝতে হবে, সে বশ্যতা অনুভব করছে। খরগোশ যদিও খুব শান্ত। তারপরও কামড় বা আচড় দিলে ভয়ের কিছু নেই। অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম, ডেটল বা স্যাভলন ব্যবহার করলেই হবে।
copy from Jago news