বাণিজ্যিকভাবে পুকুরে রঙিন মাছ চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন ঝিনাইদহের বিশ্বজিৎ। বাড়ির পাশে পুকুর লীজ নিয়ে রঙিন মাছ চাষ করছেন। গত মাসে প্রায় ২০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করেছেন। পুকুরে আরো লক্ষাধিক টাকার মাছ রয়েছে। বেকার অভিশপ্ত জীবনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রঙিন মাছে স্বপ্ন দেখছেন বিশ্বজিৎ।
জানা যায়, বিশ্বজিৎ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মালিয়াট ইউনিয়নের পাঁচকাহুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা। রাজধানীর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স শেষ করে কর্মজীবন শুরু করেন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে। বিয়ের পর শারিরীকভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়ায় চাকরি ছেড়ে দেন। তারপর অল্প পুঁজিতে স্বল্প সময়ে কিছু একটা করার কথা ভাবছিলেন। প্রথম দিকে বাড়িতে কয়েকটি ড্রামে এই মাছ চাষ শুরু করেন। সেখানে মাছ বড় হতে থাকে। কয়েক মাস পর বিক্রিও করেন। এরপর চলতি বছরের মে মাসে পুকুরে বিদেশি জাতের রঙিন মাছ চাষ শুরু করেন। মাছগুলো আকারে ছোট হলেও বেশ সতেজ ও বাহারি নানা রঙের। পুকুরে ১২-১৫ প্রজাতির মাছ রয়েছে। মাছগুলো অনেকে অর্নামেন্ট ফিসও বলে থাকেন।
বিশ্বজিৎ বলেন, আমি মাস্টার্স শেষ করেছি। চাকরিও শুরু করেছিলাম। কিন্তু স্ট্রোক আমার জীবনে ঘোর অন্ধকার নেমে আসে। কিছুটা সুস্থ্য হলে চলতি বছরের মে মাসে যশোরের চৌগাছার মাছ ব্যবসায়ী সালমান সর্দারের নিকট থেকে গাপ্পি মলি, গোল্ডফিস, কমেন্ট, রেডটিকা, কইকাপ এবং প্লাটিসহ বিভিন্ন জাতের মাছ কিনে আনি। এ পর্যন্ত পরিচর্যা ও মাছ ক্রয় বাবদ প্রায় ১৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেছি। এরমধ্যে মা মাছগুলো ডিম ছেড়ে রেনু পোনার জন্ম দিয়েছে। গত একমাসে প্রায় ২০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করেছি। এখনও যে পরিমাণের মাছ রয়েছে তা কমপক্ষে এক লাখ টাকা হবে বলে মনে করছি।
কালীগঞ্জ উপজেলা মৎস কর্মকর্তা মো. হাসান সাজ্জাদ জানান, শিক্ষিত বেকার যুবক বিশ্বজিৎ বাড়িতে একটি পুকুরে রঙিন মাছের চাষ করছে। তার মাছ চাষ পরিদর্শন করেছি। অল্প পুঁজিতেই মাছ চাষে লাভবান হওয়া সম্ভব। এলাকায় এ মাছ চাষ অনেকটা নতুন হওয়ায় মৎস্য অফিসের পক্ষ থেকে তাকে সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়েছে।