ভিনদেশী জাতের মাছের ভিড়ে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় দেশি মাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। চাহিদা পূরণে মৎস্য চাষিরাও ভিনদেশী জাতের মাছের চাষ করছেন। একসময় বাজারে পাবদা, পুটি, ট্যাংরা, খলসে, চ্যাং, রয়না, কৈ, বেলে, টাকি, মলা ঢেলা ও মাগুরসহ ছোট জাতের দেশি মাছ অহরহ পাওয়া যেতো। এখন এই মাছগুলো তেমন দেখাই যায় না।
জানা যায়, গজারিয়ার গ্রাম ও শহরের মাছের বাজাগুলোতে দেশি জাতের মাছের ব্যাপক অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। বাজারগুলোতে সুস্বাদু দেশি মাছ নেই বললেই চলে। অথচ ৫-৭ বছর পূর্বে এই অবস্থা ছিলো না। বর্তমান মাছের বাজার পাঙ্গাশ, তেলাপিয়া, সিলভার কার্প, মৃগেল জাতের মাছের দখলে। স্থানীয় অনেক মৎস্য চাষিরা এই কার্প জাতের মাছগুলো হাওর, পুকুর খালে ছোট পরিসরে চাষ করছে। কিন্তু দেশি প্রজাতির মাছ চাষ করা হচ্ছে না। এতে ধীরে ধীরে দেশি প্রজাতি বিলপ্তির পথে চলে যাচ্ছে। মৎস্য বিভাগ পদক্ষেপ নিলে বাজারে আবার দেশি মাছের সরবরাহ বাড়বে।
মৎস্য অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়, দেশের অধিকাংশ নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুর ও জলাশয়ে পানি শূণ্যতা দেখা দিয়েছে। তাই দেশি মাছের প্রাপ্যতা কমেছে। তবে চাহিদা পূরণে মাছের ঘাটতি নেই। কারণ চাহিদা অনুযায়ী মাছের চাষ করা হচ্ছে। তাছাড়া দেশি মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে মৎস্য বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে।
মৎস্য কর্মকর্তারা বলেছেন, লাগসই প্রযুক্তি ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করে পরিকল্পিতভাবে বিল, বাওড় ও পুকুরসহ জলাশয়ে মাছের চাষ করা হলে উৎপাদনে বিপ্লব ঘটবে। শুধু ছোট জাতের নয়, বিল বাওড়ে উৎপাদিত রুই, কাতলা, মৃগেলও বেশ সুস্বাদু।
গজারিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তারা বলেন, আগে নদী-নাল, খাল-বিলে যথেষ্ট পরিমানে পানি থাকতো। আর তা থেকে দেশি মাছের প্রচুর সরবরাহ পাওয়া যেত। এখন নদী-নাল, খাল-বিলে যথেষ্ট পরিমানে পানি থাকেনা। ফলে মাছের সরবরাহ কম। দেশি মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া জরুরি। খাল বিল নদীতে সৃষ্টি করতে হবে মাছের অভয়ারণ্য। আমরা এখন দেশি জাতের মাছ চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছি। শর্ত দিয়ে যদি বাওড়, খাল ও বিলে দেশি মাছ উৎপাদনের দিকে জোর দেয়া যায় তাহলে বিরাট সফলতা আসবে। দেশি মাছের চাষ ব্যাপক আকারে বাড়াতে হবে। দেশি মাছ হারিয়ে যেতে দেয়া যাবে না।