পটুয়াখালীতে বাণিজ্যিকভাবে কাঁকড়া চাষ করে চাষিরা সফল হচ্ছেন। স্বল্প পুঁজিতে ও অল্প পরিসরে এর চাষ করা যায়। ফলে এই অঞ্চলের চাষিরা এর চাষ করে নিজে সফল হওয়ার পাশাপাশি অন্যের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করছেন। এছাড়াও স্থানীয় পর্যায়ে ও বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব বলে মনে করেন মৎস্য বিশেষজ্ঞরা।
জানা যায়, পটুয়াখালীর গলাচিপার উপকূলীয় চরমেছের, চরহেয়ার, জাহাজমারা, চরআশাবাড়িয়া, চরকানকুনি, চরমোন্তাজ, চরবাংলা, চররুস্তুম, চরআন্ডা সহ প্রায় শতাধিক চর রয়েছে। এই চরের চাষিরা বাণিজ্যিকভাবে কাঁকড়া চাষে ঝুঁকছেন। এর চাষে লবন পানির প্রয়োজন হয়। আর পানিতেলবণাক্ততার মাত্রা ১৫ থেকে ৩০ পিপিটি এবং পানির তাপমাত্রা ২২ থেকে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকা প্রয়োজন। এই অঞ্চলের পানিতে মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এমন তাপমাত্রা ও লবনাক্ততা থাকায় চাষিরা এর চাষ করে থাকেন। এতে স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি বিদেশের বাজারের এখানকার কাঁকড়া পৌছানো সম্ভব বলে মনে করেন মৎস্য বিশেষজ্ঞরা।
চরমোস্তাজের সুধান চন্দ্র শীল ও চরলক্ষ্মী গ্রামের মোশারেফ সর্দার বলেন, তারা ছোট দুটো পুকুরে অল্প পরিসরে কাঁকড়া চাষ করে ৮০ হাজার টাকা আয় করেছেন। চলতি বছর তারা এরা বড় আকারের পুকুর লিজ নিয়ে এর চাষ বাড়াবেন।
তারা আরো বলেন, এর চাষে বেশি টাকা বিনিয়োগ করতে হয় না। খুব অল্প খরচেই এর উৎপাদন সম্ভব। নিয়মিত পরিচর্যা ও খাবার দিলে প্রতি হেক্টরে ২-৩ টন কাঁকড়া উৎপাদন করা সম্ভব।
চরমোন্তাজ মৎস্য ডিপোর মালিক আজাদ সাথী বলেন, মার্চ থেকে ডিসেম্বর মাস এই সময়টা কাঁকড়া আহরণের সময়। গলাচিপার উপকূলীয় অঞ্চলে প্রতিবছর প্রাকৃতিকভাবে ও চাষকৃত প্রায় ১০০-১২৫ টন কাঁকড়া আহরণের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় ২ কোটি ৮০ লাখ টাকার বেশি। এই উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় আড়াই হাজার লোক কাঁকড়া আহরণের সাথে যুক্ত রয়েছেন।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, দিন দিন এই অঞ্চলের চাষিরা কাঁকড়া চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়ছেন। চাষিরা অল্প পরিসরে এর চাষ করে বেশ লাভবান হতে পারছেন। আমরা চাষিদেরকে আধুনিক পদ্ধতিতে কাঁকড়া চাষের প্রশিক্ষণ ও এর চাষ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। আশা করছি এই অঞ্চলে কাঁকড়া চাষ আরো সম্প্রসারিত হবে।
সূত্র: আধুনিক কৃষি খামার।