আজকাল বাজারে খুব সহজেই যে সামদ্রিক সামুদ্রিক মাছটির দেখা মেলে সেটি হচ্ছে টুনা মাছ। দামেও বেশ সস্তা। এছাড়া বড় পরিসরের মুদি দোকানে কৌটাজাত টুনা মাছ বিক্রি করতেও দেখা যায়। যা অনেকেই ক্রয় করেন।
টুনা মাছ দিয়ে বিভিন্ন পদের মজার মজার খাবার তৈরি করা যায়। দেখা যায়, বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের মেন্যুতে টুনা মাছের স্যান্ডউইচ কিংবা বার্গার থাকে। অনেকেই আবার টুনা মাছের কাবাব খেতেও বেশ পছন্দ করেন।
কেবল খেতেই সুস্বাদু নয়, পাশাপাশি শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডও মিলবে এই চর্বিহীন মাছ থেকে। চলুন জেনে নেয়া যাক ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডে ভরপুর টুনা মাছের আরও কিছু বিস্ময়কর উপকারিতা সম্পর্কে-
ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড কোষের ঝিল্লিতে কাজ করে।
কম দামে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড যোগ করার সহজ উপায় হল কৌটাজাত টুনা।
ওমেগা-থ্রি চোখ ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি সারা দিনের শক্তি যোগাতেও সহায়তা করে।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেল্থ অফিস অব ডায়েটারি’র তথ্যানুসারে ‘ইট দিস, নট দ্যাট’ ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ‘পলিআনস্যাচুরেইটেড ফ্যাট’ এর ভালো উৎস। যা শরীরকে সুস্থ ও সক্রিয়া রাখে।
এছাড়া ওমেগা-থ্রি’য়ের আছে ‘আইকোসানোয়েডস’ যৌগ হৃদযন্ত্র, ফুসফুস, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা ও ‘এন্ডোক্রাইন’য়ের কার্যকারিতায় ভালো প্রভাব রাখে।
হার্ভার্ড হেল্থ’ নির্দেশনা দেয়, ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরের উৎপাদিত হয় না। শরীরের বিভিন্ন কাজের জন্য দরকারী এই চর্বি নানান রকম খাবার যেমন- মাছ (টুনা), সবজির তেল, বাদাম, তিসির বীজ ও তেল এবং শাক থেকে পাওয়া যায়।
হার্ভার্ড হেল্থ’য়ের তথ্যানুসারে, হরমোনের ওপর প্রভাব ফেলে ‘রক্ত জমাট বাঁধা, ধমনী দেয়ালের সংকোচন ও প্রসারণ এবং প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
ওমেগা-থ্রি প্রদাহনাশক। অর্থাৎ এটা হৃদরোগের পাশাপাশি ‘লুপাস’ (রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যখন দেহের কোষ ও অঙ্গ আক্রান্ত করলে যে রোগ হয়), একজিমা, বাত এমনকি কিছু ক্ষেত্রে ক্যান্সার প্রতিরোধেও সহায়ক।
অনেকেই মনে করেন, চর্বি খাওয়া শরীরের জন্য খারাপ। তবে মনে রাখতে হবে ‘ডায়েটারি ফ্যাট’ শরীরের জন্য উপকারী। কারণ এটা হজমে সহায়তা করে ও পেট ভরা রাখে। এছাড়াও সারাদিন শরীরে শক্তি যোগায়।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন (এএইচএ)’ এর তথ্যানুসারে, প্রতিদিন ভালো চর্বি খাওয়া (মনোস্যাচুরেইটেড ও পলিআনস্যাচুরেইটেড চর্বি) কোষের বৃদ্ধি ও হরমোন নিঃসরণে বিশেষত, ক্ষুধার হরমোন ‘গ্রেলিন’ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
‘আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন (এএইচএ)’ এর তথ্যানুসারে, প্রতিদিন ভালো চর্বি খাওয়া (মনোস্যাচুরেইটেড ও পলিআনস্যাচুরেইটেড চর্বি) কোষের বৃদ্ধি ও হরমোন নিঃসরণে বিশেষত, ক্ষুধার হরমোন ‘গ্রেলিন’ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
যদিও খাবার তালিকায় অল্প পরিমাণে স্যাচুরেটেড চর্বি রাখা খারাপ নয় (যা সাধারণত দুধ ও প্রাণিজ উপাদানে থাকে)। বরং খাবার তালিকায় স্বাস্থ্যকর চর্বি বাড়ানোর চেষ্টা করলে সার্বিকভাবে সুস্থ রাখতে ও ওজন কমাতে সহায়তা করে।
ইউএসডিএ অ্যাগ্রিকালচারাল রিসার্চ সার্ভিস’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী. দৈনিক কমপক্ষে ২৫০ মি.গ্রা, ওমেগা-ত্রি গ্রহণ করা প্রয়োজন। যা সপ্তাহে ২ গ্রাম ওমেগা-থ্রি’য়ের সমান। এই পরিমাণ ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক’য়ের দাবী, ৩ আউন্স ‘অ্যালবাকোর’ টুনাতে ১.৫ গ্রাম ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। তারমানে সপ্তাহে এক কৌটা টুনা মাছ থেকেই মিলবে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। তবে অবশ্যই কেনার আগে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ দেখে নিতে ভুলবেন না।
কপি:theagronews.com/ রিপোর্ট প্রদানকারী-মোঃ মেহেদী হাসান (বরিশাল)