মাছ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। তাছাড়া আমরা মাছে-ভাতে বাঙালি হওয়ায় খাবারের সময় পাতে মাছ না হলে চলেই না। অন্যান্য মাছে মতো সামুদ্রিক মাছ খেতেও অত্যন্ত সুস্বাদু। কেবল স্বাদেই নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর এই মাছ।
সামুদ্রিক মাছে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ডি। এসব পুষ্টি উপাদান অনেক জটিল রোগ থেকে আমাদেরকে রক্ষা করে থাকে। সামুদ্রিক মাছের আরেকটি স্বাস্থ্যকর দিক হলো এটি খুবই কম-ক্যালোরি যুক্ত খাবার। প্রজাতি ভেদে সামুদ্রিক মাছের স্বাদ ভিন্ন হয় কিন্তু পুষ্টিগুণে সব সামুদ্রিক মাছই অনন্য। সামুদ্রিক মাছের গুনাগুণের শেষ নেই। ইলিশ, কোরাল, রূপচাঁদা, বাইলা, চিংড়ি, ফোঁপা, লইট্টা ও লাইখ্যা সহ প্রভৃতি মাছে আছে প্রচুর মিনারেল ও ভিটামিন।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, সামুদ্রিক মাছ হার্ট-অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং উচ্চ-রক্তচাপের ঝুঁকি কমায়। শিশু-কিশোরদের মানসিক ও শারীরিক গঠনে বেশ ভূমিকা পালন করে। চলুন জেনে নেয়া যাক সামুদ্রিক মাছের অবিশ্বাস্য পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সর্ম্পকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
ডায়াবেটিস রোগীরা খাদ্য তালিকায় সামুদ্রিক মাছ রাখতে পারেন। এতে তাদের এ রোগ নিয়ন্ত্রণে সুবিধা হবে।
মস্তিকের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
নিউরোলজিস্টদের মতে শরীরে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা বাড়তে থাকলে ব্রেনের বিশেষ কিছু অংশের ক্ষমতা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে ডিমেনশিয়া বা অ্যালঝাইমারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।
দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে
সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিট থাকে। আর এই ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রেটিনার কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করার মধ্যে দিয়ে সার্বিকভাবে দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
সামুদ্রিক মাছ মানুষের দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে নানা রোগ থেকে রক্ষা করতে সক্ষম। এতে জিংক ও আয়োডিন আছে। জিংক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং আয়োডিন গলগণ্ড রোগ প্রতিরোধ করে।
হৃদরোগ প্রতিরোধ করে
সামুদ্রিক মাছে থাকা ওমেগা-৩ নামক ফ্যাটি এসিড হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী। এই ফ্যাটি এসিড হৃদরোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
বেশিরভাগ সামুদ্রিক মাছে ভিটামিন এ ও ডি থাকে, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তাই হৃদরোগে আক্রান্ত ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সামুদ্রিক মাছ উপকারী।
জয়েন্ট পেইন সারায়
রিউমাটয়েড আর্থাইটিসে আমাদের অস্থিসন্ধীগুলো ব্যাথাসহ ফুলে যায়। রেগুলার সামুদ্রিক মাছ খেলে রিউমাটয়েড আর্থাইটিসের উপসর্গ কমে আসে।
সহজে হজমযোগ্য আমিষ
সামুদ্রিক মাছের আমিষ সহজে পরিপাকযোগ্য। এছাড়া দেহের বৃদ্ধি ও ক্ষয়রোধে সাহায্য করে। এটি ভিটামিন বি-এর উৎকৃষ্ট উৎস। তাছাড়া সামুদ্রিক মাছের আমিষ ও তেল দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
তাছাড়া সামুদ্রিক মাছে থাকে আয়োডিন, সেলেনিয়াম, জিংক এবং পটাশিয়ামসহ অনেক অপরিহার্য পুষ্টি উপাদান। থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের জন্যে আয়োডিন অত্যাবশ্যকীয়, এবং সেলেনিয়াম একধরণের হজমশক্তি তৈরি করে যা আমাদেরকে ক্যান্সারের হাত থেকে বাঁচায়। এছাড়াও সিলোনিয়াম শরীরে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং বার্ধক্য প্রতিরোধ করে।
সূত্র: এনডিটিভি
ডেইলি-বাংলাদেশ/এএ